পুরনো রোগ আর সারল না! চাপের মুখে বারবার চুপসে যাওয়ার সেই বদভ্যাসের আর বদল ঘটল কোথায়! ৪৬৯ রানের বোঝা কাঁধে নিয়ে শুভমন গিল (Shubman Gill) থেকে চেতেশ্বর পূজারাদের (Cheteshwar Pujara)’ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা। চলতি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে (ICC World Test Championship Final 2023) টিম ইন্ডিয়ার (Team India) দুই তারকা ‘জাজমেন্ট’ দিয়ে বোল্ড হলেন। আর সেটাই মেনে নিতে পারছেন না রবি শাস্ত্রী (Ravi Shastri)। প্রথম দিন বোলারদের সমালোচনা করেছিলেন। বিশেষ করে মহম্মদ শামির (Mohammed Shami) ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আর এবার দুই ব্যাটারকে নিয়ে পড়লেন টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন হেড কোচ।
মাইক হাতে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় গর্জে উঠলেন শাস্ত্রী। তিনি বলেন, “দুজনেই খুব বাজে ভাবে উইকেট ছুড়ে দিয়ে চলে গেল! শুভমনের বয়স কম। ও তাও শিখতে পারবে। কিন্তু পূজারা এত অভিজ্ঞ হয়ে কীভাবে নিজের উইকেট দিয়ে দিল! অফ স্টাম্পের বাইরে বল থাকলে পায়ের মুভমেন্ট কেমন হওয়া উচিত, সেটা কী ও ভুলে গেল।”
এবার দেখে নেওয়া যাক শুভমন ও পূজারা কীভাবে আউট হলেন?
তাঁকে বলা হচ্ছে ‘নেক্সট বিগ থিং ইন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট’। চলতি বছর সব ফরম্যাটে ঝুরিঝুরি রান করেছেন শুভমন। একদিনের ক্রিকেটে দ্বিশতরানের পর, জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে করেছিলেন শতরান। আর আইপিএল, সেখানে তো শুভমন রাজত্ব করেছেন। ১৭ ম্যাচে রান ৮৯০। সঙ্গে তিনটি শতরান! সেখানে এবার লাল বলের সামনে পড়তেই গুটিয়ে গেলেন। স্কট বোল্যান্ডের ভিতরে আসা ডেলিভারিকে জাজমেন্ট দিয়ে বোল্ড হলেন পঞ্জাব তনয়। ফিরলেন ১৩ রানে।
৩০ রানে ২ উইকেট হারাতেই দায়িত্ব সামলানোর জন্য এলেন দুই অভিজ্ঞ বিরাট কোহলি ও পূজারা। সেই এপ্রিল মাস থেকে ইংল্যান্ডে রয়েছেন পূজারা। সাসেক্সের হয়ে কাউন্টিতে দুটি শতরান করে খুঁজে পেয়েছিলেন হারানো ছন্দ। তবে এতে লাভের লাভ কিছুই হল না। ক্যামেরুন গ্রিনের বল ছাড়তে গিয়ে বোল্ড হলেন ভারতের টেস্ট ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড।
ক্রিকেটে বলা হয়, তিনটে স্টাম্প যিনি চেনেন, তিনি তত ভালো ব্যাটার। আরও টেকনিক্যালি বললে, যে ব্যাটার নিজের অফস্টাম্প চেনেন বা আগলে রাখতে জানেন, দিনের শেষে তিনিই সাফল্য পান। অন্তত টেস্ট ক্রিকেটে এটাই বেসিক। পূজারার মতো অভিজ্ঞ ব্যাটার বুঝতেই পারলেন না, তাঁর অফস্টাম্প কোথায়? ক্যামেরন গ্রিনের বল পড়ে ভেতরে এসেছিল। পূজারা খেলবেন কি খেলবেন না, রাখবেন কি ছাড়বেন, ভাবতে ভাবতে গ্রিন নিয়ে গেলেন তাঁর অফস্টাম্প। টেস্ট ক্রিকেটে অফস্টাম্প ব্যাটারের অহঙ্কারের জায়গা। সোজা কথায় বললে পূজারার অহংয়ে আঘাত করলেন গ্রিন। এমন বল টেস্টে হয়তো ১ হাজার বার খেলেছেন পূজারা। ভুল এক আধ দিন সবাই করেন। মুশকিল হল, খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মহা ভুল করে বসলেন পূজারা। আর তাই পূজারার এমনভাবে আউট হওয়াকে মেনে নিতে পারছেন শাস্ত্রী।
এর আগে বোলারদের বিদ্ধ করে শাস্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “অভিজ্ঞতা থেকে টিম ইন্ডিয়া কিছুই শেখেনি। ট্র্যাভিসকে প্রথম ৪০ রান এমনভাবে মিষ্টি বেলানো হলো যেন দিওয়ালি চলছে! আর শামিরা দু’মাসের আইপিএল খেলে এসে হাঁটছে দ্যাখো। যেন দু’বছরের ক্লান্তি নিয়ে বল করছে! ”
অনেক বছর কোনও ভারতীয় ভাষ্যকারকে ভারতীয় দলের এমন তীব্র সমালোচনা করতে শোনা গেল। ট্রেসার বুলেটের মতো যাচ্ছিল কথাগুলো।