একটা সময়ে আইসিসি ইভেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ‘চোকার্স’ বলা হত। তবে সাম্প্রতিক ইতিহাসে সেই ‘চোকার্স’ তকমা জুটেছে ভারতের কপালে। বিশ্ব কাঁপানো টিম ইন্ডিয়া ফের একবার আইসিসি ইভেন্টে চোক করল। এটাই যেন এখন দস্তুর হয়ে গিয়েছে। আর লন্ডনে যা হওয়ার ছিল, ঠিক সেটাই ঘটল। ব্যাক-টু-ব্যাক আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও ফিনিশিং লাইন টপকাতে পারল না খাতায়-কলমে বিশ্বের এক নম্বর টিম ইন্ডিয়া। কেনিংটন ওভালে টেস্ট বিশ্বযুদ্ধের পঞ্চম তথা শেষ দিনে ভারতকে ২৮০ রান তুলতে হত জেতার জন্য। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল সাত উইকেট। বাইশ গজে ‘আল্টিমেট টেস্ট’ ওরফে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শেষ হাসি হাসল প্যাট কামিন্সের (Pat Cummins) অস্ট্রেলিয়া। খালি হাতেই দেশে ফিরবেন রোহিত শর্মা ( Rohit Sharma) অ্যান্ড কোং। ২০৯ রানে জিতল কামিন্সের দল। শেষ দিনে দেড় সেশনে বাজিমাত করল অস্ট্রেলিয়া। ভারতের ব্য়াটিং ভরাডুবির জন্য বিরাট কোহলি (Virat Kohli), অজিঙ্কা রাহানে (Ajinkya Rahane) ও রবীন্দ্র জাদেজার (Ravindra Jadeja) মতো সিনিয়র তারকা ক্রিকেটারকে ধুয়ে দিলেন সুনীল গাভাসকর (Sunil Gavaskar)! ব্যাটিং মায়েস্ত্রো কার্যত ছিঁড়ে খেলেন বিরাটকে!
ম্যাচের পর গাভাসকর সম্প্রচারকারী চ্যানেলে বলেনে, ‘এদিনের ব্যাটিং ছিল অত্য়ন্ত নড়বড়ে। যা দেখলাম তা অত্যন্ত হাস্যকর। বিশেষত শট নির্বাচন। গতকাল পূজারার থেকে সাদামাটা শট দেখেছি। পূজারার মতো কারোর থেকে ওরকম শট প্রত্যাশিত নয়। হয়তো কেউ ওকে বলেছে স্ট্রাইক রেট, স্ট্রাইক রেট। একটা সেশনও ক্রিজে থাকতে পারল না কেউ! এক সেশনে আট উইকেট! কী হচ্ছে এসব। কোহলির শট নিয়ে আর কী বলব, অত্যন্ত সাধারণ একটা শট। অফস্টাম্পের বাইরে বল ছিল, ও ছেড়েই দিচ্ছিল বল, কিন্তু আচমকাই ও সচেতন হয়ে গেল যে, এক রান নিয়ে ওকে হাফ সেঞ্চুরি করতে হবে! যখন কেউ মাইলস্টোনের দোরগোড়ায় থাকে, তখন এমনই হয়। জাদেজার সঙ্গেও হয়েছে এমন। ৪৮ রানে দাঁড়িয়ে ওর ওই শট নেওয়া উচিত হয়নি! অজিঙ্কা রাহানে ৪৬ রানে দাঁড়িয়ে কী করে ওরকম শট খেলল! আচমকাই কেউ এরকম শট নেয় না, যখন মাথার মধ্যে ল্যান্ডমার্কের কথা ঘোরে, তখনই এরকম হয়। কোহলি অত্যন্ত খারাপ শট নিয়েছে। আমাকে নয়, কোহলিকে জিজ্ঞাসা করুন যে, কী করে ও ওই শট খেলল! কোহলি তো ম্যাচ জেতার জন্য, লম্বা ইনিংস খেলা নিয়ে বড় বড় কথা বলে! কী হল! অফস্টাম্পের এতটা বাইরের বল কী করে ওভাবে খেলল! আমার মনে হয় ব্যাটাররা যখন ল্য়ান্ডমার্কের কাছে চলে আসে, তখনই তারা এরকম শট নেয়। প্রথম ইনিংসে জাদেজা কী ভালোই না ব্যাট করছিল! ওরকম শট খেলারই তো দরকার ছিল না! কোহলি অফস্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে খেলেল! আরও একটি হাফ-সেঞ্চুরির জন্য ভুল বল খেলে ফেলল!’ ১০ বছর কেটে গেল। ভারতের আইসিসি ট্রফির খরা কাটল না। এবার দেখার চলতি বছর ভারত ঘরের মাঠে পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপ জিততে পারে কিনা! নাকি এই রোগ চলতেই থাকে। এখনই না ভাবলে আরও হতাশা অপেক্ষা করে আছে রোহিতদের জন্য।