জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতির(Wrestling Federation of India, WFI) সভাপতি ব্রিজভূষণ শরন সিংয়ের (Brijbhushan Sharan Singh) বিরুদ্ধে ওঠা, যৌন হেনস্থার অভিযোগ এবার তদন্ত করে দেখছে দ্য ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ওরফে আইওএ (The Indian Olympic Association, IOA)। আইওএ-র সভাপতি পিটি ঊষাকে চার দাবি জানিয়েছ আন্দোলনরত কুস্তিগীররা চিঠি দিয়েছিলেন শুক্রবার। সেই চিঠিতে সই করেছেন আন্দোলনকারী বিনেশ ফোগাট, বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, রবি কুমার ও দীপক পুনিয়া। কুস্তিগীরদের দাবিগুলি ছিল- ১) যৌন হেনস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে আইওএ অবিলম্বে কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করুক। ২) জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতির পদত্য়াগ, ৩) চলতি কুস্তি সংস্থার কমিটি ভেঙে দেওয়া হোক এবং ৪) নতুন কমিটি গঠন করে এই সংস্থা চালানো হোক, যেখানে কুস্তিগীরদের পরামর্শ নেওয়া হবে।
এই চিঠি পাওয়ার পরেই শুক্রের সন্ধ্যায় আইওএ দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। আইওএ সদস্য মেরি কম, দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়, অলকানন্দা অশোক, যোগেশ্বর দত্ত ও সহদেব যাদব এই কমিটিতে রয়েছেন। রয়েছেন দুই উকিলও। আইওএ জানিয়েছে যে, তারা তদন্তের খাতিরে অভিযোগকারীদের ডেকে পাঠাবে। জাতীয় ভারোত্তোলন সংস্থার সভাপতি ও এই কমিটির অন্যতম সদস্য সহদেব যাদবের সঙ্গে কথা বলেছে সংবাদসংস্থা এএনআই। তিনি বলেন, ‘আমরা বসে সকলের কথা শুনে নিরপেক্ষ তদন্ত করার চেষ্টা করব। আশা করি সুবিচার হবে।’জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতির অপসারণের দাবিতে দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনায় বসেছেন বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, সরিতা মোর, সঙ্গীতা ফোগাট, সত্যওয়ার্ট মালিক, জিতেন্দর কিনহাস, সুমিত মালিকের মতো ৩০ জন কুস্তিগীররা। এই মুহূর্তে ভারতীয় কুস্তি তোলপাড় হয়ে গিয়েছে।
আন্দোলনের মুখ বিনেশ ফোগাট বলেছেন, ‘শ্লীলতাহানি নিয়ে কথা বললে আমাদের কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। ফেডারেশনের সদস্যরা মহিলা কুস্তিগীরদের সঙ্গে অশালীন ভাষাতেও কথা বলেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। কিছু কোচ আছেন, যাঁরা জাতীয় ফেডারেশনের খুব কাছের। সেই কোচেরাই অল্পবয়সী মেয়েদের শোষণ করেছে। জানি না মোট কত তরুণীর তাঁদের জন্য ক্ষতি হয়েছে! আমাকে অন্তত ১০-১২ জন মহিলা কুস্তিগীর জানিয়েছেন যে, ডব্লিউএফআই-এর সভাপতির তাঁদের যৌন হেনস্থা করেছে। আমি তাদের নাম এখনই বলছি না। তবে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আমি নামগুলি বলব। আমাকে মানসিক ভাবে নির্যাতনও করেছে ডব্লিউএফআই। মনে হত জীবন শেষ করে দিই।’ গোটা দেশ তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে কুস্তিগীরদের এই আন্দোলনে।