কর্মীরা মার খেয়ে মরছে আর নেতারা জোট বৈঠকে! বাংলার ভোট টেনে মোদীর নিশানা বাম-কংগ্রেসকে

বাংলায় তৃণমূলকেই প্রধান প্রতিপক্ষ মনে করে বাম-কংগ্রেস জোট। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির সুরেই শাসক তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলছেন মহম্মদ সেলিম, অধীর চৌধুরীরা। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় স্তরে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের বৈঠককে বাংলার বিজেপি নেতারা ‘রাজ্যে কুস্তি, দিল্লিতে দোস্তি’ বলে আক্রমণ করছেন। এ বার সেই আক্রমণে যোগ দিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নাম না-করে তিনি বৈঠকে উপস্থিত সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির পাশাপাশি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীদের আক্রমণ করেছেন। তাঁর দাবি, বাংলায় নিজেদের কর্মীরা মার খেলেও বেঙ্গালুরু বৈঠকে হাজির হওয়া বাম-কংগ্রেস নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে যখন বিজেপি-বিরোধী ২৬ দলের বৈঠক, তখন দিল্লিতে জোটসঙ্গীদের নিয়ে নৈশভোজের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। তার আগে সকালে পোর্ট ব্লেয়ারের বীর সাভারকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন একটি ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন মোদী। সেখানেই তিনি বিরোধী জোটকে ‘কট্টর ভ্রষ্টাচার সম্মেলন’ আখ্যা দেন। দুর্নীতি এবং পরিবারতন্ত্রের কথা বলার পাশাপাশি টানেন বাংলার প্রসঙ্গও। সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে তিনি বলেছেন, ‘‘কিছু দিন আগেই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে। সেখানে প্রকাশ্যে হিংসা হয়েছে, লাগাতার খুনখারাপি হচ্ছে। এ নিয়েও এঁদের মুখ বন্ধ। কংগ্রেস ও বাম কর্মীরা ওখানে নিজেদের কী করে বাঁচাবেন, ভাবছেন। কিন্তু তাঁদের নেতারা ব্যক্তিগত স্বার্থে নিজেদের কর্মীদেরও মরার জন্য ছেড়ে দিয়েছেন।’’

পাল্টা বাংলার কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী প্রধানমন্ত্রীকেই নিশানা করেছেন। এআইসিসি নেতা অমিতাভ বলেন, ‘‘কংগ্রেস কী ভাবে চলবে সেটা প্রধানমন্ত্রী ঠিক করে দেবেন না।’’ একই সঙ্গে তাঁর আক্রমণ, ‘‘তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দুর্নীতিতে যুক্ত শুভেন্দু অধিকারী কিংবা অতীতে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অজিত পওয়ারকে নিজেদের শিবিরে যিনি নিয়েছেন, সেই প্রধানমন্ত্রীর কংগ্রেস নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও অধিকারই নেই।’’ রাজ্যে কংগ্রেসের জোটসঙ্গী সিপিএমও একই সুরে আক্রমণ করেছেন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে সব দলকে এককাট্টা করার ব্যাপারে গোড়া থেকেই বাম-কংগ্রেস ইতিবাচক ভূমিকা নিচ্ছে। সম্ভবত প্রধানমন্ত্রীর সেটা পছন্দ নয়। আমি শুধু একটাই প্রশ্ন করতে চাই, বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে সঠিক সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী এল না কেন?’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.