সাতসকালে বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে দত্তপুকুরের মোচপোল। বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই প্রবল ছিল যে ওই সময় কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের দেহাংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আশপাশে। যে বাড়িতে বাজি তৈরি হত সেই বাড়িটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত। ভেঙে পড়েছে ছাদ। বাড়ির কংক্রিটের পিলারও ভেঙে পড়েছে। তার নীচে অনেকেই আটকে পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে তিন জনের। আশপাশেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ছিন্নভিন্ন দেহাংশ। কোথাও গাছের ডালে, আবার কোথাও টালির চাল থেকে মৃত ব্যক্তিদের দেহাংশ ঝুলতে দেখা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক স্থানীয় বাসিন্দার দাবি, বেশ কয়েক জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ১০ পেরিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর।
বারাসত পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে রয়েছেন। পুলিশের তরফে এখনও মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়নি।
মোচপোলের বাসিন্দা শামশুল আলি বেআইনি বাজির কারবার চালাতেন বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের যোগ রয়েছে বলেও দাবি তাঁদের। রাজনীতির সূত্রেই তিনি দিনের পর দিন ধরে বেআইনি কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। স্থানীয়রা দাবি করছেন, বার বার বাজি কারখানার বিরোধিতা করে প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন গা করেনি। পাত্তা দেননি অন্য তৃণমূল নেতারাও। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, প্রশাসন এবং তৃণমূলের যোগসাজশেই রমরমিয়ে চলছিল বেআইনি বাজির কারবার।
এগরায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রশাসনের চোখ খুলে গিয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশ প্রশ্ন তুলছেন, এ কেমন চোখ খোলা! পুলিশের নাকের ডগায় রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় রমরমিয়ে কী করে চলে বাজির কারবার?