চলতি মাসের শুরুতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হবে। শুধু তা-ই নয়, শাহ এ-ও বলেছিলেন, শীঘ্রই সিএএ কার্যকরের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাবে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দেশে নির্বাচনী আচরণ বিধি কার্যকর হওয়ার আগেই সিএএ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে সিএএ পাশ করিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ওই আইনানুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত। সংসদের দু’কক্ষে পাশ হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতিও অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি।
গত মাসেই সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে কর্মরত এক আধিকারিক জানান, সিএএ কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগেই জারি হয়ে যাবে। এই আইনের নিয়ম বা ধারা তৈরি হয়ে গিয়েছে। নাম নথিভুক্তকরণের জন্য অনলাইন পোর্টালও প্রস্তুত। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘সিএএ-র গোটা প্রক্রিয়াই অনলাইনে হবে। সেখানে আবেদনকারীদের শুধু জানাতে হবে তাঁরা কবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।’’
সিএএ কার্যকর করা নিয়ে দীর্ঘ দিন কেন্দ্র সরকারের মধ্যেই টালবাহানা চলছে। অন্য দিকে, করোনা পর্বের আগে থেকেই দেশের নানা প্রান্তে সিএএ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। বিজেপি বিরোধী দলগুলিই এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল। পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে সিএএ কার্যকরের বিরোধী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই গোটা প্রক্রিয়ায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা ন্যূনতম করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র।
এখনও পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। শোনা যাচ্ছে, মার্চ মাসের প্রথম দিকেই ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। আর দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দেশে কার্যকর হবে নির্বাচনী আচরণ বিধি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, তার আগেই সিএএ কার্যকর করতে চায় নরেন্দ্র মোদী সরকার।