হায়দরাবাদকে হারিয়ে গত মঙ্গলবারই ফাইনালে উঠে গিয়েছে কেকেআর। রবিবার ফাইনালে তারা নামছে সেই হায়দরাবাদের বিরুদ্ধেই। চেন্নাইয়ে গত কয়েক দিনে হয়েছে অনুশীলনও। বিশ্রাম পেয়ে ক্রিকেটারেরা তরতাজা হয়েই নামছেন। ফাইনালে কেকেআরের দলে কি কোনও বদল আসতে পারে? আনন্দবাজার অনলাইন বেছে নিল সম্ভাব্য একাদশ।
রহমানুল্লা গুরবাজ়
গোটা আইপিএলে কেকেআরের হয়ে ওপেন করেছেন ফিল সল্ট। কিন্তু প্লে-অফে তাঁকে পাওয়া যায়নি। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কোয়ালিফায়ারের ম্যাচে সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে হয়েছিল গুরবাজ়কে। প্রথম পরীক্ষায় সসম্মানে পাশ তিনি। ওপেন করতে নেমে ১৪ বলে ২৩ রান করেন। কেকেআরের শুরুটা ভাল করে। দারুণ স্ট্রাইক রেট হয়তো ছিল না। কিন্তু ওপেনিংয়ে আগ্রাসন এবং ধরে খেলার মধ্যে যে ভারসাম্য রাখতে হয় সেটা পেরেছেন গুরবাজ়।
সুনীল নারাইন
আগের ম্যাচে খুব ভাল খেলতে পারেননি। কিন্তু এ বারের আইপিএলে কেকেআরের সেরা ব্যাটার নারাইনই। পাঁচশোর কাছাকাছি রান করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্যাটার। একটি শতরান এবং তিনটি অর্ধশতরান রয়েছে। ওপেনিংয়ে তাঁর উপর যে আস্থা রাখা হয়েছে তার দাম দিচ্ছেন পুরোপুরি। ফাইনালে তাঁর থেকে আর একটা বড় ইনিংস চান সমর্থকেরা।
নীতীশ রানা
আইপিএলের অনেকগুলি ম্যাচে খেলতে পারেননি চোটের কারণে। কিন্তু মুম্বই ম্যাচে তাঁর ইনিংস কেকেআরকে জিততে সাহায্য করেছিল। কে না জানে, কেকেআর দলে রানার অভিজ্ঞতা কতটা কাজে লাগে। গত বারের অধিনায়ক মাঠের মধ্যেও কার্যকরী ভূমিকা নেন। ফাইনালে তাঁর থেকে বড় রানের আশা রয়েছে।
শ্রেয়স আয়ার
কোয়ালিফায়ারে অর্ধশতরান করেছেন। তবে ব্যাট হাতে আইপিএলে যে বিরাট কিছু করেছেন এমনটা বলা যাবে না। বরং নজর কেড়ে নিয়েছে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্ব। যে ভাবে মাথা খাটিয়ে বোলার, ফিল্ডিং পরিবর্তন করেছেন তাতে সুবিধা হয়েছে দলের।
বেঙ্কটেশ আয়ার
দলের যখনই তাঁকে দরকার পড়েছে, এগিয়ে এসেছেন। আগের ম্যাচে অর্ধশতরান বা মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়েতে তাঁর ইনিংস কেউই ভুলে যাবেন না। তবে এ বার বেঙ্কটেশকে ভোগাচ্ছে ধারাবাহিকতার অভাব। ফাইনালে তাঁর থেকেও ভাল রানের আশা রয়েছে সমর্থকদের।
রিঙ্কু সিংহ
গত বারের মতো এ বারের আইপিএলে বিশেষ সুযোগই পাচ্ছেন না। টপ অর্ডার ভাল খেলার কারণে তাঁকে অনেকটা দেরি করতে নামতে হচ্ছে। যে এক-দু’টি ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন, কাজে লাগাতে পারেননি। কে বলতে পারে ফাইনালেই তাঁর কাছে নায়ক হওয়ার সুযোগ আসবে না?
আন্দ্রে রাসেল
রাসেলকে নিয়ে আলাদা করে কিছু বলারই দরকার নেই। হয় ব্যাট, না হয় বল, কিছুই না হলে ফিল্ডিং। তিনি সব ভূমিকাতেই সমান দক্ষ। আগের ম্যাচে অভিষেক শর্মার শটে লাফিয়ে তাঁর ক্যাচ অনেকেই ভুলে যাননি। এ ছাড়া বল হাতে যেকোনও সময়ে দু’-এক ওভারে উইকেট নিতেও দক্ষ তিনি। ব্যাট হাতেও দরকারে দলের কাজে আসেন।
রমনদীপ সিংহ
শেষের দিকে নেমে চালিয়ে খেলে দলের রান আরও একটু বাড়িয়ে দিতে তাঁর জুড়ি নেই। এ বারের আইপিএলে বেশ কয়েকটি ম্যাচে সেই জিনিস দেখা গিয়েছে। রমনদীপের সৌজন্যে দল দুশো বা আড়াইশো রানের গন্ডি পেরিয়েছে অনায়াসেই। ফাইনালেও যদি তিনি সে রকম কিছু করে পারেন তা হলে লাভ হবে দলেরই।
মিচেল স্টার্ক
আইপিএলের শেষের জন্য স্টার্ক নিজের সেরাটা তুলে রেখেছেন কি না তা নিয়ে অনেকেই আলোচনা শুরু করেছেন। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে তাঁর বোলিং নজর কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু ফাইনালে কোনও ভুলচুক করলে চলবে না এটা অসি ক্রিকেটারও ভাল করেই জানেন। এখন দেখার ফাইনালে বল হাতে জাদু দেখাতে পারেন কি না।
হর্ষিত রানা
প্রচুর উইকেট হয়তো তাঁর নেই। কিন্তু কেকেআরের পেস বিভাগ দুর্বল মনে হয়নি হর্ষিত রানার পারফরম্যান্সের জন্য। দরকারে উইকেট নেওয়া হোক বা রান নিয়ন্ত্রণে রাখা, সবেতেই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। ১২ ম্যাচে ১৭টি উইকেট রয়েছে তাঁর।
বরুণ চক্রবর্তী
গত বারের আইপিএলটা একেবারেই ভাল যায়নি বরুণের। সেই আক্ষেপ এ বার মিটিয়ে দিয়েছেন তিনি। বেগনি টুপির তালিকায় তিনি রয়েছেন তৃতীয় স্থানে। তবে বেগনি টুপি পেতে গেলে ফাইনালে ৫ উইকেট দরকার, যা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার: এখানেই কেকেআরকে বুদ্ধি কাজে লাগাতে হবে। এই সম্ভাব্য একাদশ তৈরি করা হয়েছে আগে কেকেআর ব্যাট করবে ধরে নিয়ে। যদি তারা আগে বল করে তা হলে চেন্নাইয়ের পিচের কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত স্পিনার খেলানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সূযশ শর্মা বা অনুকূল রায় আসতে পারেন। পেসার খেলাতে চাইলে বৈভব অরোরাকে নিতে পারে কেকেআর।