বিরোধীহীন লোকসভায় মোদী-শাহেরা দণ্ডসংহিতা বিল পাশ করাবেন? নতুন করে বিতর্কের প্রস্তাব গৃহীত

বিরোধীদের আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত করে শীতকালীন অধিবেশনেই লোকসভায় নতুন দণ্ডসংহিতা সংক্রান্ত তিনটি বিল নিয়ে বিতর্কে সক্রিয় হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। ঘটনাচক্রে, প্রায় বিরোধীহীন পরিস্থিতিতে। সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতির দাবিতে বিক্ষোভের ‘অপরাধে’ ৯৫ জন বিরোধী সাংসদ গোটা শীতকালীন অধিবেশনপর্বের জন্য সাসপেন্ড হওয়ার পরে। মঙ্গলবার বিকেলে নতুন করে বিলগুলি নিয়ে আলোচনার জন্য সরকারপক্ষের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে লোকসভায়।

গত ১১ অগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করে জানিয়েছিলেন, ১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ দ্বারা এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ (ভারতীয় সাক্ষ্য আইন) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য বিল’-এ।

এর পরেই বিল তিনটি সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, শাহ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের এই আইন বদলের বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাঠানো ২২ অগস্টের সেই চিঠির জবাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘‘আইন বদলের এই উদ্যোগ ভারতীয় জনজীবনকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই চূড়ান্ত সতর্কতা বজায় রেখেই এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করতে হবে।’’ চিঠিতে মমতা জানিয়েছিলেন, বর্তমান লোকসভার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তাই তাড়াহুড়ো করে শীতকালীন অধিবেশনে যেন এ সংক্রান্ত বিল পাশের চেষ্টা না করা হয়।

কংগ্রেস, ডিএমকে-সহ একাধিক বিরোধী দলও বিল পাশে তাড়াহুড়ো নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। এর পরে তিনটি বিল প্রত্যাহার করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, নতুন করে আলোচনার নোটিস দিয়ে মোদী সরকার শীতকালীন অধিবেশনেই বিল পাশ করাতে সক্রিয় হল বলে মঙ্গলবারের ‘তৎপরতা’য় ইঙ্গিত মিলেছে। এর আগে গত সপ্তাহে দণ্ডসংহিতা সংক্রান্ত তিনটি বিল নিয়ে আলোচনার জন্য নতুন করে নোটিস দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.