ফের ত্রাণ বণ্টনের দুর্নীতি নিয়ে অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। ২০১৭ সালে মালদায় যে বন্যা হয়েছিল, সেই দুর্যোগে সরকারি ত্রাণ বণ্টন নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি স্বীকার করে নিতে বাধ্য হল রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েই এই দুর্নীতির বিষয়টি মাথা পেতে নিল রাজ্য সরকার। তবে দুর্নীতির কথা মেনে নিয়ে আরও বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য। হাই কোর্টের তরফে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে কি এত বছর সরকার ঘুমাচ্ছিল। এই প্রেক্ষিতে সরকারকে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের জবাব পড়ার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল মালদায়। এর জেরে ঘরছাড়া হয়েছিলেন বহু মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন কয়েক হাজার। সেই প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল যে বন্যায় যাঁদের বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তাঁদের ৭০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সেই ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন ১৪ হাজার জন। তবে সম্প্রতি একটি মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে, যেখানে আবেদনকারী দাবি করেন যে ত্রাণের তালিকায় ব্যাপক গরমিল ছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই মামলা চলছে উচ্চ আদালতে।
মামলাকারীর অভিযোগ, তালিকায় ৭ হাজার আবেদনকারীর ফোন নম্বর এক। ২০১৯ সালে এই অভিযোগ স্বীকার করেছিলেন সেখানকার বিডিও স্বয়ং। দুর্নীতি যে হয়েছে, তা স্পষ্ট ছিল। কিন্তু তারপরও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি এত বছরেও। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। আর এর জেরেই রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন, ‘এতদিন কি তবে ঘুমাচ্ছিল সরকার?’
জানা গিয়েছে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৫ অগস্ট। সেদিন এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে একটি হলফনামা জমা করতে বলা হয়েছে। তবে হলফনামা জমার আগে সরকার তরফে আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল কিশোর দত্ত কার্যত দুর্নীতির কথা স্বীকার করেছেন আদালতে।