হঠাৎ কেন হুড়োহুড়ি? কী করে পদপিষ্ট শয়ে শয়ে মহিলা ও শিশু? কী কারণে ‘সৎসঙ্গ’ সর্বনাশা হাথরসে?

উত্তরপ্রদেশের হাথরসে সিকান্দরারাউ এলাকায় ‘সৎসঙ্গ’ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। আলিগড়ের কমিশনার নিশ্চিত করেছেন, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে প্রশাসনিক ভূমিকা নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে বিপর্যয়ের কারণ নিয়েও। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় সৎসঙ্গের আয়োজক কমিটিকেই দায়ী করছেন অনেকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, সৎসঙ্গের জন্য যে প্যান্ডেল বাঁধা হয়েছিল, তা ঘেরা ছিল। পাখার ব্যবস্থা করা হয়নি। প্যান্ডেল খোলামেলা থাকলেও আর্দ্রতা এবং গরমের কারণে সকলেই হাঁসফাঁস করছিলেন। ফলে সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পরেই মানুষ হুড়মুড়িয়ে মাঠের বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আসা-যাওয়ার জন্য যে গেট তৈরি হয়েছিল, সেটিও অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ হওয়ার কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অনেকে মাটিতে পড়ে যান। বাকিরা তাঁদের উপর দিয়েই বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করেন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, নারায়ণ সাকার ওরফে ‘ভোলে বাবা’ নামে স্বঘোষিত এক ধর্মীয় গুরুর জন্য ‘মানব মঙ্গল মিলন সদ্ভাবনা অনুষ্ঠান কমিটি’র তরফে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত ওই সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয়েছিল মঙ্গলবার। অংশগ্রহণ করেছিলেন হাজার হাজার ভক্ত। ভক্তদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই সৎসঙ্গে যোগ দিতে এসেছিলেন তাঁরা। সেখানেই ঘটে যায় বিপর্যয়। হুড়মুড়িয়ে বেরোনোর সময় পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন অনেকে। বেশির ভাগই মহিলা। কয়েক জন শিশুও মারা গিয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। আহতদের ইটাওয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

https://platform.twitter.com/embed/Tweet.html?dnt=false&embedId=twitter-widget-0&features=eyJ0ZndfdGltZWxpbmVfbGlzdCI6eyJidWNrZXQiOltdLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X2ZvbGxvd2VyX2NvdW50X3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9iYWNrZW5kIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19yZWZzcmNfc2Vzc2lvbiI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZm9zbnJfc29mdF9pbnRlcnZlbnRpb25zX2VuYWJsZWQiOnsiYnVja2V0Ijoib24iLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X21peGVkX21lZGlhXzE1ODk3Ijp7ImJ1Y2tldCI6InRyZWF0bWVudCIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZXhwZXJpbWVudHNfY29va2llX2V4cGlyYXRpb24iOnsiYnVja2V0IjoxMjA5NjAwLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X3Nob3dfYmlyZHdhdGNoX3Bpdm90c19lbmFibGVkIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19kdXBsaWNhdGVfc2NyaWJlc190b19zZXR0aW5ncyI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdXNlX3Byb2ZpbGVfaW1hZ2Vfc2hhcGVfZW5hYmxlZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdmlkZW9faGxzX2R5bmFtaWNfbWFuaWZlc3RzXzE1MDgyIjp7ImJ1Y2tldCI6InRydWVfYml0cmF0ZSIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfbGVnYWN5X3RpbWVsaW5lX3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9mcm9udGVuZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9fQ%3D%3D&frame=false&hideCard=false&hideThread=false&id=1808143593963757946&lang=en-gb&origin=http%3A%2F%2Fmgmt-abp.ttef.in%2Fwp-admin%2Fadmin.php%3Fpage%3Dworkspace_edit%26id%3D1528086&sessionId=86906559af25c380b2abe79cdbe7edcf99c019fb&theme=light&widgetsVersion=2615f7e52b7e0%3A1702314776716&width=550px

সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৎসঙ্গে গিয়ে আহত এক ব্যক্তি বলেন, “ঘটনাস্থলে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়েছিল। ফলে প্রচণ্ড ভিড়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। বাইরে যাওয়ার কোনও চওড়া রাস্তা ছিল না। সৎসঙ্গ শেষে সকলেই একসঙ্গে বেরোনোর চেষ্টা করলে এই ঘটনা ঘটে। অনেকে পদপিষ্ট হয়ে মারা যান। অনেকে অজ্ঞান হয়ে যান। আমিও বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু অনুষ্ঠানস্থলের বাইরেই অনেক মোটরবাইক দাঁড় করানো ছিল। যার জন্য আমি বেরোতে পারিনি।’’

আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘হাজার হাজার মানুষের জনসমাগম হয়েছিল। তবে প্যান্ডেলের মধ্যে কিছু হয়নি। রাস্তায় যে মেন গেট তৈরি হয়েছিল, সেখান দিয়ে বেরোনোর সময় অনেকে রাস্তার ডান দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন, আর অনেকে বাঁ দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সময়ই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। যাঁরা মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের উপর দিয়েই অনেকে চলে যান।’’

স্থানীয়দের অনেকের অভিযোগ, সৎসঙ্গ উপলক্ষে সোমবার রাত থেকেই মুঘলাগড়ি গ্রামে অনুষ্ঠানস্থলের সামনের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কর্তৃপক্ষের তরফে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ সেই রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। সৎসঙ্গ যখন শেষ হচ্ছে তখন ওই রাস্তায় আগে থেকেই যানজট আর ভিড় ছিল। ফলে হুড়োহুড়ি আরও বেড়ে যায়। সেই সময়ই পদপিষ্ট হন অনেকে।

ওই অনুষ্ঠানে যে অতিরিক্ত ভিড় হয়েছিল, তা মেনে নিয়েছেন হাথরসের জেলাশাসক আশিস কুমার। তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে অত্যধিক হুড়োহুড়ির জন্য এই ঘটনা ঘটেছে। জেলা প্রশাসনের তরফে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ৫০-৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।’’

জেলাশাসক আরও বলেন, ‘‘মহকুমা শাসক ওই অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়েছিলেন। প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে ঘটনাস্থলের ভিতরে যা ব্যবস্থা ছিল তা আয়োজকদের তরফেই করা হয়েছিল। আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

https://platform.twitter.com/embed/Tweet.html?dnt=false&embedId=twitter-widget-1&features=eyJ0ZndfdGltZWxpbmVfbGlzdCI6eyJidWNrZXQiOltdLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X2ZvbGxvd2VyX2NvdW50X3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9iYWNrZW5kIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19yZWZzcmNfc2Vzc2lvbiI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZm9zbnJfc29mdF9pbnRlcnZlbnRpb25zX2VuYWJsZWQiOnsiYnVja2V0Ijoib24iLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X21peGVkX21lZGlhXzE1ODk3Ijp7ImJ1Y2tldCI6InRyZWF0bWVudCIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZXhwZXJpbWVudHNfY29va2llX2V4cGlyYXRpb24iOnsiYnVja2V0IjoxMjA5NjAwLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X3Nob3dfYmlyZHdhdGNoX3Bpdm90c19lbmFibGVkIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19kdXBsaWNhdGVfc2NyaWJlc190b19zZXR0aW5ncyI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdXNlX3Byb2ZpbGVfaW1hZ2Vfc2hhcGVfZW5hYmxlZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdmlkZW9faGxzX2R5bmFtaWNfbWFuaWZlc3RzXzE1MDgyIjp7ImJ1Y2tldCI6InRydWVfYml0cmF0ZSIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfbGVnYWN5X3RpbWVsaW5lX3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9mcm9udGVuZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9fQ%3D%3D&frame=false&hideCard=false&hideThread=false&id=1808119738356142539&lang=en-gb&origin=http%3A%2F%2Fmgmt-abp.ttef.in%2Fwp-admin%2Fadmin.php%3Fpage%3Dworkspace_edit%26id%3D1528086&sessionId=86906559af25c380b2abe79cdbe7edcf99c019fb&theme=light&widgetsVersion=2615f7e52b7e0%3A1702314776716&width=550px

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন আগরার অতিরিক্ত ডিজি। ঘটনার খবর পেয়ে মুঘলাগড়ি গ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী লক্ষ্মীনারায়ণ চৌধুরী এবং সন্দীপ সিংহ। রাজ্য পুলিশের ডিজিও ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সেই হাথরসের এক দলিত তরুণীর গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। সেই হাথরসেই আবার পদপিষ্টের ঘটনা গোটা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.