কালীঘাটে কেন? রাতভর জেরা নুরকে, ১৫ ইঞ্চির খুকরি, বেসবল ব্যাট লুকোনো ছিল গাড়ির মেঝেতে

শুক্রবার ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের দিন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির সামনে থেকে গ্রেফতার হওয়া শেখ নুর আমিনের গাড়ি থেকে মিলল আরও অস্ত্র। রাতভর তাঁকে জেরা করা হয় কালীঘাট থানায়। তার পরে, গাড়ির ফ্লোর ম্যাটের তলায় লুকনো খুকরি এবং একটি বেসবল ব্যাট উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার আমিনকে আদালতে তোলা হয়। ৩ অগস্ট পর্যন্ত তাঁকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, নুরের গাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র, মাদক-সহ ১৯টি আপত্তিকর বা সন্দেহজনক বস্তু পাওয়া গিয়েছে।

শুক্রবার সমাবেশে যোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কালীঘাটের বাড়ি থেকে বেরোনোর কিছু ক্ষণ আগেই, বাড়ির কাছে একটি সন্দেহজনক গাড়িকে আটকায় পুলিশ। তাতে ‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো ছিল। চালকের আসনে বসেছিলেন স্যুট, প্যান্ট পরিহিত এক ব্যক্তি। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে বিএসএফের কর্তা বলে পরিচয় দেন তিনি। পুলিশ পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে দেখান। কিন্তু দেখেই পুলিশের সন্দেহ হয়। এর পরেই ওই ব্যক্তিকে ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর গাড়িটিও কালীঘাট থানায় আনা হয়। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় পিস্তল, ভোজালি, একাধিক ভুয়ো পরিচয়পত্র, পুলিশের ব্যবহার করার বেল্ট এবং টুপি। পাওয়া যায় গাঁজাও। জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম শেখ নুর আমিন। তিনি অন্দরসজ্জার ব্যবসা করেন। সায়েন্স সিটির কাছে পঞ্চান্নগ্রামে তাঁর একটি দোকান রয়েছে। ব্যবসায় নুরের এক মহিলা অংশীদারও রয়েছেন।

রাতভর নুরকে জেরা করেন পুলিশ আধিকারিকেরা। তাতেই বেরিয়ে আসে, গাড়িতে রয়েছে আরও অস্ত্র। নুরের কথামতো পুলিশ গাড়ির মেঝের ম্যাট সরাতেই বেরিয়ে আসে একটি ১৫ ইঞ্চির খুকরি এবং একটি বেসবল ব্যাট।

পুলিশ সূত্রে খবর, নুরের ব্যবসায়িক অংশীদার মহিলার সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। নুরের বাড়ি মেদিনীপুর শহরের অলিগঞ্জে। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গেও পুলিশ যোগাযোগ রাখছে। কোন উদ্দেশ্য নিয়ে নুর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ির কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন, তা জানার চেষ্টা করে চলেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত বেশ কিছু পরস্পর বিরোধী বয়ান তাঁর কাছ থেকে মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.