ধর্মতলায় এখনও বাস পার্কিং কেন? রাজ্য সরকারকে বিকল্প বিবেচনার নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের

যানবাহনের ধোঁয়া-দূষণ থেকে ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধকে বাঁচাতে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড সরানো হোক। কলকাতা হাই কোর্টে এই দাবি তুলে অতীতে মামলা দায়ের হয়েছিল। যা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল। যার ভিত্তিতে ২০১১ সালে শীর্ষ আদালত রাজ্য সরকারকে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরের কথা বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু, প্রায় বারো বছরেও তা কার্যকর না হওয়ায় ফের এ নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। শুক্রবার যার শুনানি ছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডের বিকল্প পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে রাজ্য সরকারকে এগিয়ে আসতে বলেছে হাই কোর্ট।

মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত জানাচ্ছেন, সংশ্লিষ্ট বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরিত করে ধর্মতলায় ভূপৃষ্ঠ বা ভূগর্ভস্থ বহুতল বাস পার্কিং তৈরির ব্যাপারে রাজ্যকে বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। সুভাষ তাঁর আবেদনে জানিয়েছেন, ধর্মতলায় বাসস্ট্যান্ড ভূগর্ভে, না কি ভূপৃষ্ঠে হবে, তা ‘ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (নিরি) পর্যবেক্ষণ করার পরেই সিদ্ধান্ত হোক। পাশাপাশি, হাই কোর্টের আইনজীবীদের গাড়ি রাখার জন্য কিরণশঙ্কর রায় রোডের এক জায়গায় পার্কোম্যাট তৈরির সুপারিশও করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘বাবুঘাটে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা-ও দেখতে বলেছে আদালত।’’ সেই সঙ্গে ভিক্টোরিয়া সংলগ্ন এলাকার ট্র্যাফিক সিগন্যাল এমন ভাবে গড়ে তুলতে বলা হয়েছে, যাতে সেখানে স্টপেজ না থাকে বা যানবাহন বেশি ক্ষণ না দাঁড়ায়। যানবাহন থামার অর্থই হল, সংলগ্ন এলাকায় ধোঁয়া-দূষণ বেড়ে যাওয়া।

প্রসঙ্গত, ধোঁয়ার দূষণ থেকে ঐতিহ্যশালী ভিক্টোরিয়াকে রক্ষা করার জন্য ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরিত করার সুপারিশ করেছিল নিরি। তারই ভিত্তিতে দায়ের মামলার প্রেক্ষিতে সেই ২০০৭ সালে ওই বাসস্ট্যান্ডকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। যে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় রাজ্য। কিন্তু, নিরির পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতেই হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছিল শীর্ষ আদালতও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.