২০২২ সালের ৫ মে মমতা ‌মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত সকলের কেন গ্রেফতারি চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী

চাকরি বাতিল নিয়ে চাপানউতরের মধ্যে অতিরিক্ত পদ তৈরি সংক্রান্ত রায় নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার বালুরঘাট লোকসভার কুমারগঞ্জে বরাহার ফুটবল মাঠে সভা ছিল বিরোধী দলনেতার। সেখানেই তিনি দাবি করেন, ২০২২ সালের ৫ মে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের সকলকেই হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে হবে সিবিআইকে।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ মামলার রায়ে কলকাতা হাই কোর্ট ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। এসএসসিতে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ সামনে আসার পরে অতিরিক্ত পদ (সুপার নিউমেরিক পদ) তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় নবান্ন। রাজ্য সরকারই সেই অনুমোদন দিয়েছিল। সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছে, সিবিআই রাজ্য সরকারের সঙ্গে যুক্ত সেই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করবে, যাঁরা অতিরিক্ত পদ তৈরির অনুমোদন দিয়েছিলেন এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্রয়োজনে ওই ব্যক্তিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে কেন্দ্রীয় সংস্থা, জানিয়েছে আদালত। এই প্রসঙ্গেই শুভেন্দু তৃণমূলের পাশাপাশি সিবিআইয়ের উপরে চাপ তৈরি করতে দাবি করেন, বাড়তি পোস্ট তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘২০২২ সালের ৫ মে ক্যাবিনেটে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের সবাইকে অবিলম্বে সিবিআই কাস্টডিতে নেওয়ার দাবি করি।’’ একই সঙ্গে ওই দিনের মন্ত্রিসভায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেই নথিও তাঁর কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন শুভেন্দু।

এর পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মমতাকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা হাই কোর্ট একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। যাঁদের চাকরি চলে গিয়েছে, তাঁদের নিয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই। এঁদের সামনে দোকান খুলে চাকরি বিক্রি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর শাগরেদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ৩০ লক্ষ চাকরিপ্রার্থীর যাঁরা সর্বনাশ করেছেন তাঁদের সর্বনাশ হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে।’’

প্রসঙ্গত আদালতের রায় নিয়ে সোমবারই রায়গঞ্জের সভা থেকে মমতা বলেছেন, ‘‘এটা বেআইনি অর্ডার। আমরা এটা নিয়ে উচ্চ আদালতে যাচ্ছি।’’ সেই সঙ্গে চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যাঁদের চাকরি যাওয়ার কথা বলেছে, তাঁদের বলছি, আমরা সবাই আপনাদের পাশে আছি। চিন্তা করবেন না, হতাশ হবেন না। কেউ জীবনের ঝুঁকি নেবেন না।’’ তারই পাল্টা বালুরঘাট থেকে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চোরেদের রানি, এখন উন্মাদের মতো চিৎকার করছেন। বলছেন রায় মানি না। আপনাকে মানতে হবে না। আর কোনও প্রমাণের অপেক্ষা নেই, তৃণমূল চোর।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.