এত দিন অম্বানী-আদানির বিরুদ্ধে বলার পরে ভোট আসতেই কেন চুপ রাহুল? মোদীর তোপে সায় নেই দলের

২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেল। নরেন্দ্র মোদী ‘অম্বানী-আদানি’-র নাম করে রাহুল গান্ধীকে নিশানা করলেও ‘মোদীর পরিবার’ বা বিজেপি নেতাদের মুখে তার পুনরাবৃত্তি শোনা গেল না।

সাধারণত মোদী কোনও বিষয়ে বিরোধীদের নিশানা করলেই গোটা বিজেপি মাঠে নেমে পড়ে। বিজেপি নেতারা, যাঁরা এখন সমাজমাধ্যমে নিজেদের নামের পাশে ‘মোদী কা পরিবার’ লিখছেন, তাঁরা মোদীর কথার পুনরাবৃত্তি করতে থাকেন। এ বার ব্যতিক্রম ঘটল।

বুধবার তেলঙ্গানায় মোদী প্রশ্ন তুলেছিলেন, গত পাঁচ বছর অম্বানী-আদানির কথা বলার পরে ভোট আসতেই কেন চুপ করে গেলেন রাহুল? তাঁদের কাছ থেকে রাহুল কত টাকা পেয়েছেন? টেম্পো ভরে কত ঝুলি কালো টাকা কংগ্রেসের কাছে পৌঁছেছে? কিন্তু আর কোনও বিজেপি নেতার মুখে এই কথা শোনা যায়নি।

রাহুলের নেতৃত্বে গত কাল থেকেই কংগ্রেস মোদীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী যদি জেনে থাকেন, শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী ও গৌতম আদানির কাছে কালো টাকা রয়েছে, তা হলে তিনি ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতরকে পাঠাচ্ছেন না কেন? সিপিআই সাংসদ বিনয় বিশ্বম মোদীকে চিঠি লিখে একই দাবি জানিয়েছেন।

কংগ্রেসের দাবি, রাহুলের চাপেই মোদীকে তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই শিল্পপতিকে নিশানা করতে হচ্ছে। আদানিদের চার্টার্ড বিমানে মোদীর ছবি নিয়েও কংগ্রেস প্রচারে নেমেছে। দলীয় মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘‘আগে কখনও প্রধানমন্ত্রীর এত দুর্বল ও মরিয়া ভাব দেখা যায়নি। তিনি নিজেই এখন বন্ধু শিল্পপতিদের কালো টাকার কথা বলছেন।’’

রাহুলের কটাক্ষ, টেলিপ্রম্পটারেরও মিথ্যে বলার সীমা আছে। কিন্তু মোদীর নেই। ভিডিয়ো-বার্তায় যুব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর হাত থেকে ভোট বেরিয়ে যাচ্ছে। আগামী ৪-৫ দিনে তিনি আপনাদের নজর ঘোরাতে কোনও না কোনও নাটক করবেন। তাঁর মিথ্যা প্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। ৪ জুন ইন্ডিয়া জোটের সরকার আসছে। কথা দিচ্ছি, ১৫ অগস্টের মধ্যে আমরা ৩০ লক্ষ সরকারি চাকরির শূন্য পদে নিয়োগের কাজ শুরু করব।’’

বিজেপি এ নিয়ে নীরব। উল্টে তামিলনাড়ুর বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাই বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস ২০১৯ থেকে শিল্পপতিদের দুর্নাম করছে। প্রধানমন্ত্রী আসলে বলতে চেয়েছেন, এত দিন যখন রাহুল গান্ধী বিজেপির বিরুদ্ধে শিল্পপতিদের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলছিলেন, এখন তা হলে চুপ করে যাওয়ার জন্য তিনি কত টাকা নিয়েছেন, সেটা বলুন।’’

আজ মোদীর কোনও জনসভা ছিল না। জে পি নড্ডা, অমিত শাহের জনসভা থাকলেও কারও মুখে মোদীর আক্রমণের পুনরাবৃত্তি শোনা যায়নি। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের প্রশ্ন, ‘‘আজ টেম্পো ধীরে চলছে কেন? মিথ্যের রাজা নরেন্দ্র মোদী কিছুই বললেন না! তিনি নিজের দুই বন্ধুর কালো টাকা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলার পরে তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.