কাজ়াখস্তানে বিমান ভেঙে পড়ার কারণ সম্পর্কে এ বার মুখ খুলল সেই বিমান সংস্থা আজ়ারবাইজান এয়ারলাইন্স। তাদেরই একটি যাত্রিবাহী বিমান গত ২৫ ডিসেম্বর আজ়ারবাইজান থেকে রাশিয়ার দিকে উড়ে যাচ্ছিল। গন্তব্য ছিল গ্রজ়নি। কিন্তু তার আগে কাজ়াখস্তানের আকতু শহরে বিমানটি ভেঙে পড়ে। এই ঘটনায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
বিমান দুর্ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর আজ়ারবাইজান এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, এর নেপথ্যে রয়েছে ‘বহিরাগত শারীরিক এবং প্রযুক্তিগত হস্তক্ষেপ’। সরাসরি কারও নাম করেনি বিমান সংস্থাটি। তবে তারা জানিয়ে দিয়েছে, অভ্যন্তরীণ কোনও কারণে বিমান ভেঙে পড়েনি। দুর্ঘটনার পর থেকে একাধিক তত্ত্ব নিয়ে জল্পনা চলছে। বিমান সংস্থার বক্তব্য এটুকু স্পষ্ট, যান্ত্রিক কোনও গোলযোগ বা চালকের কোনও ভুলে এই দুর্ঘটনা ঘটেনি। তাদের দাবি, বাইরে থেকে কিছু করা হয়েছে।
কাজ়াখস্তানের দুর্ঘটনাটি সম্পর্কে প্রধান যে দু’টি তত্ত্ব উঠে এসেছে, তার মধ্যে অন্যতম পাখির ঝাঁকের সঙ্গে বিমানের ধাক্কা। এ ছাড়া, দ্বিতীয় তত্ত্বে বলা হচ্ছে, ভুলবশত ইউক্রেনের বিমান ভেবে রাশিয়া ওই যাত্রিবাহী বিমানটিকে গুলি করে নামিয়েছে। আজ়ারবাইজান এয়ারলাইন্সের বক্তব্যে এই দুই তত্ত্বই জিইয়ে রইল।
কাসপিয়ান সাগরের পূর্ব তীরে কাজ়াখস্তানের আকতু শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে একটি ফাঁকা জায়গায় বিমানটি ভেঙে পড়েছিল। তাতে বিমানকর্মী-সহ মোট ৬৭ জন ছিলেন। গ্রজ়নিতে ঘন কুয়াশার কারণে ওই বিমানের গতিপথ পরিবর্তিত হয়। কাজ়াখস্তানে জরুরি অবতরণ করতেও চেয়েছিলেন পাইলট। বিমানটি যেখানে ভেঙে পড়েছে, সেখানকার কিছু ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বিমানের গায়ে অনেক ছিদ্র তৈরি হয়েছে। তা থেকেই অনেকের ধারণা, গুলি করে বিমানটিকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষত, যে এলাকার বিমান ভেঙে পড়েছে, সেখানে কিছু দিন আগেও ইউক্রেনের ড্রোন হামলা হয়েছিল। রুশ বাহিনী পাল্টা গুলি বা ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে তার মোকাবিলা করে। এ ক্ষেত্রেও তেমন কিছু ঘটেছে বলে অনেকের দাবি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স অন্তত চারটি সূত্র উল্লেখ করে জানিয়েছে, রুশ বাহিনীই ভুল করে আজ়ারবাইজানের বিমানে হামলা চালিয়েছে।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে মস্কোও মুখ খুলেছে। রাশিয়া সরকারের মুখপাত্র ঘটনার পরের দিনই জানিয়েছেন, এখনও বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত চলছে। তাই আগে থেকে কিছু ভেবে নেওয়া এবং তা নিয়ে চর্চা চালিয়ে যাওয়া উচিত নয়। তবে বিতর্ক তাতে থামেনি। এ বার আজ়ারবাইজানের বিমান সংস্থার দাবিতেও সেই জল্পনা জোরদার হল।