পশ্চিমবঙ্গের গ্রুপ সি নিয়োগ মামলার তদন্তে পরীক্ষার উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার করেছিল সিবিআই। এ বার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গাজিয়াবাদ অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলল বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের একাংশ। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে এসএসসি মামলার শুনানিতে ওই চাকরিপ্রাপকদের আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে সওয়াল করেন। শুধু তা-ই নয়, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজি়ৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া ‘নির্দেশ’ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
মঙ্গলবার এসএসসি মামলার শুনানিতে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রোসিদির ডিভিশন বেঞ্চে বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের আইনজীবী অনিন্দ্য প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন গাজিয়াবাদ গেল সিবিআই? কিসের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের গাজিয়াবাদ অভিযান?’’ এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘নাইসার দফতরে না গিয়ে প্রাক্তন আধিকারিক পঙ্কজ বনসলের বাড়িতেই কেন গেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা?’’
বিচারপতি বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই তদন্তের রিপোর্ট নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের একাংশ। সেই সঙ্গে তাদের বক্তব্য, ‘‘কেন বেতন ফেরতের মতো কড়া নির্দেশ দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়? আপনি হলে কি এই ধরনের নির্দেশ দিতেন?’’ যা শুনে বিচারপতি বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ তাদের আইনজীবীর উদ্দেশে বলে, ‘‘আমরা আর একটু এগিয়ে হয়তো বলতাম হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথা। কেউ অবৈধ ভাবে চাকরি পেলে কী করা উচিত ছিল বলে মনে করছেন?’’
বিচারপতিদের প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী অনিন্দ্য বলেন, ‘‘যদি ধরেও নেওয়া যায় যে কোনও যোগ্য ব্যক্তি অবৈধ ভাবে চাকরি পেয়েছেন কিন্তু নিষ্ঠার এবং যোগ্যতার সঙ্গে চাকরি করেছেন তা হলে কি তাঁর বেতন ফেরত দেওয়ার কথা বলা যায়?’’
মঙ্গলবারের শুনানিতে ওঠে চাকরিপ্রার্থীদের ২৩ লক্ষ ওএমআর শিটের প্রসঙ্গও। আদালতে স্কুল সার্ভিস কমিশন জানায়, তারা ২৩ লক্ষ ওএমআর শিট সব খতিয়ে দেখেনি। শুধু সিবিআই যে সব ওএমআর শিট পরীক্ষা করতে দিয়েছিল সেগুলিই খতিয়ে দেখেছে। পাল্টা এসএসসি-কে আদালত প্রশ্ন করে, ‘‘যদি ২৩ লক্ষ ওএমআর শিট পুনরায় খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়, তবে তা কি সম্ভব?’’ কমিশন জানায়, বিষয়টি সময়সাপেক্ষ, কিন্তু সম্ভব। বুধবার আবারও এই মামলার শুনানি রয়েছে।