আজ ২১ জুলাই- এর মঞ্চ থেকে একাধিক ইস্যুতে বিজেপিকে নিশানা করেছেন
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গুরু পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বেলুড় মঠে গিয়ে স্বামীজিদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বেরিয়ে আসার পর তৃণমূল নেতাকে পাল্টা জবাব দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। অভিষেক ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে অর্ন্তকলহ চলছে বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
গুরু পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সভাপতি মহারাজ শ্রীমৎ স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ ও সাধারণ সম্পাদক মহারাজ শ্রীমৎ স্বামী সুবিরানন্দজি মহারাজের আর্শীবাদ নিতে বেলুড় মঠে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানে থেকে বেরিয়ে আসার পর সাংবাদিকরা ২১ জুলাই- এর মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি বিরোধী মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চান সুকান্ত মজুমদারের কাছে। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্যের পাল্টা দিতে একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের শাসক দলকে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এমনকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি কর্মীদের মাতাল বলে কটাক্ষ করেছেন। এর পাল্টায় সুকান্ত মজুমদার বলেন, মাতাল, রেপিস্ট, চরিত্রহীন লম্পটরা সবাই তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পদ। উনি আসলে ওনার নিজের পার্টির কথা বলতে গিয়ে ভুল করে আমাদের পার্টির কথা বলে ফেলেছেন। পাড়ার যত পেঁচো, মাতাল সব ওনার দলেরই নেতা। উনি হয়তো সবার নাম জানবেন না। উনি চাইলে আমি জেলা ধরে ওইসব মাতালদের লিস্ট ওনার কাছে পাঠিয়ে দেব।
অভিষেক আজ অভিযোগের সুরে বলেছেন, ভোটের সময় ৪০ কোটি টাকা মদে খরচ করেছে বিজেপি। অভিষেকের এই মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করেছে দুর্গা ভাতের জন্য। তার লিস্ট রয়েছে আমাদের হাতে। বুথ লেভেল পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকা করে এক একজনের পেছনে খরচ করাছিল তৃণমূল কংগ্রেস বলে দাবি বিজেপির রাজ্য সভাপতির।
আজ দুজনেই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকলেও একসাথে ২১- এর মঞ্চে পিসি ভাইপোকে দেখা যায়নি। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল থাকবে? না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল থাকবে? এই বিষয় নিয়ে দলের অন্দরে বিবাদ রয়েছে।
আজ মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কর্মীদের ২১ জুলাই- এর ইতিহাস জানতে আহ্বান জানান। এই বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস একুশে জুলাই পালন করে, কংগ্রেস একুশে জুলাই আলাদা করে পালন করে। আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে দুটি একুশে জুলাই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এটা দেখলে অবাক হবো না।
আজ অভিষেক বলেছেন, তৃণমূল আজ এত বড় দল যে সেটা নিয়ে তিনি গর্ব অনুভব করেন। এর পাল্টা দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, একসময় এই কথা সিপিএম বলত। তারা হারিয়ে গেছে। এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বেশি গর্ব অনুভব করছেন, আগামী দিনে গর্তে হারিয়ে যাবেন।
আবাস যোজনায় যাদের যাদের নাম আছে তারা সকলে ডিসেম্বরের মধ্যে টাকা পাবেন রাজ্য সরকারের তরফে, বলে দাবি করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার কে চালাচ্ছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? নাকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে? উনিতো রাজ্য সরকারের কেউ নন। উনি একজন সাধারণ সাংসদ। সাংসদ হয়ে যদি সরকারের গতিপথ ঠিক করে দেন, তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর উচিত এটিকে সাংবিধানিক সিলমোহর দেওয়া। সাংবিধানিক সিলমোহর ছাড়া যদি কেউ এই ঘটনা ঘটিয়ে যান তাহলে তাতে ভারতবর্ষের সংবিধান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যাচ্ছে।
তৃণমূলের জনসমর্থনের প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের দাবি, ভোট লুট না করে, ছাপা না দিয়ে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোট করিয়ে দেখান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলেই বোঝা যাবে সাধারণ মানুষের কতটা ভালবাসা তৃণমূলের প্রতি আছে।