লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের দফতরে ইডি আধিকারিকের ডাউনলোড করা ১৬টি ফাইল দেখতে চাইলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘ওই ১৬টি ফাইলে কী আছে আমি দেখব। শনিবারই নিয়ে আসুন। এ নিয়ে যাবতীয় বিতর্ক মেটাতে চাই।’’
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার অফিসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে সেখানকার কম্পিউটারে ১৬টি ফাইল ডাউনলোড করেন ইডির এক আধিকারিক। সেই ফাইল বেআইনি ভাবে ডাউনলোড করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন সংস্থার এক কর্মী। সেই অভিযোগ ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে কলতাতা পুলিশ। এর মধ্যে হাই কোর্টের তরফেও ওই ফাইল দেখতে চাওয়া হল। বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, ১৬টি ফাইল পুলিশকে আদালতে আনতে হবে শনিবারই। শনিবার দুপুরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা।
নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার তদন্তেই অভিষেকের সংস্থা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের দফতরে তল্লাশি চালায় ইডি। তার আগে অবশ্য নিয়োগ মামলা থেকে নিষ্কৃতি চেয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন অভিষেক। সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা হওয়ার কথা। তার আগেই নতুন করে কেন ইডি এই মামলায় আবার সক্রিয় হল, তা জানতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন অভিষেক। সেখানেই উঠে আসে ওই বিতর্কিত ১৬টি ফাইলের প্রসঙ্গ।
শুক্রবার অভিষেকের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘এই মামলা এখন বিচারাধীন। অথচ একই মামলায় ইডি সম্প্রতি আবার তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কী ভাবে সক্রিয় পদক্ষেপ করছে ইডি? এটা কি করা যায়?’’ আদালতে তিনি এ-ও বলেন যে, ‘‘একটি কম্পিউটারের কোনও ফাইলই খোলা হয়নি। অথচ আর একটি কম্পিউটার থেকে কিছু ফাইল ডাইনলোড করা হয়েছে।’’
ইডির দাবি, তাদেরই এক আধিকারিক তাঁর মেয়ের হস্টেলের খোঁজে ওই কম্পিউটারে কিছু সার্চ করেছিলেন। আদালতে অভিষেকের আইনজীবী জানতে চান, ‘‘ইডি অফিসাররা পিকনিক করতে গিয়েছিলেন?’’
অভিষেকের আইনজীবীর এই সওয়ালের পাল্টা বিচারপতি ঘোষ বলেন, ‘‘যে ১৬টি ফাইল নিয়ে এত বিতর্ক সেগুলি কি দেখেছেন? ওই ফাইল নিয়ে আসা হোক। আমি দেখতে চাই। এই বিষয়টির আগে নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন।’’
যদিও ইডির আইনজীবী তথা কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটির জেনারেল এসভি রাজু বলেন, ‘‘এখন অভিষেকের নতুন আবেদন শোনার কোনও যৌক্তিকতা নেই। আদালতের নজরদারিতে তদন্ত হচ্ছে। আপত্তি থাকলে সেখানে গিয়ে বলা হোক। ইডির যে অফিসার তাঁর মেয়ের জন্য কম্পিউটারে কিছু করেছেন, সে জন্য ইডিকে দায়ী করা ঠিক নয়। ওই অফিসারের বিরুদ্ধে তো জিডি করা হয়েছে। তার পরেও আদালতে কেন নতুন করে আবেদন করতে হবে?’’