গত বার দুঃস্বপ্নের মরসুম কাটলেও এ বার স্বপ্ন দেখছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। আরও এক বার আইপিএলের ফাইনালে ওঠার সুযোগ ছিল তাদের কাছে। স্বপ্ন দেখছিলেন হার্দিক পাণ্ড্যও। গত বার পারেননি। এ বার নিজের পুরনো দলকে ফাইনালে তুলে ট্রফি জেতানোর সুযোগ ছিল তাঁর কাছে। কিন্তু পারলেন না তিনি। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে পঞ্জাব কিংসের কাছে হেরে ভেঙে পড়েন হার্দিক পাণ্ড্য। নিজের কাঁধেই হারের দায় নিয়েছেন মুম্বই অধিনায়ক।
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ২০৪ রান তাড়া করতে নেমে অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ারের ৪১ বলে ৮৭ রানের ইনিংসে ম্যাচ জেতে পঞ্জাব। ১২ বলে ২৩ রান দরকার ছিল পঞ্জাবের। শেষ ওভারে খেলা গড়ায়নি। ১৯তম ওভারে অশ্বনী কুমারকে চারটে ছক্কা মেরে খেলা শেষ করে দেন শ্রেয়স। তার পরেই দেখা যায়, মাঠে হাঁটু মুড়ে বসে পড়েছেন হার্দিক। প্রথমে দু’হাত দিয়ে মুখ ঢাকেন তিনি। পরে বেশ কিছু ক্ষণ তাকিয়ে থাকেন নীচের দিকে।
হার্দিককে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে আসেন জসপ্রীত বুমরাহ। অধিনায়কের পিঠে হাত রাখেন তিনি। ধীরে ধীরে হার্দিক উঠে দাঁড়ান। তখন তাঁর চোখে জল। কাঁদতে কাঁদতেই মাঠ ছাড়েন মুম্বইয়ের অধিনায়ক। শুধু হার্দিক নন, মুম্বইয়ের মালকিন নীতা অম্বানীও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে তাঁরা হেরে গিয়েছেন। আইপিএলের ইতিহাসে ২০০ রানের বেশি করে কখনও হারেনি মুম্বই। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে যে সেই রেকর্ড ভেঙে যাবে তা ভাবতে পারেননি তিনিও।
হারের দায় হার্দিক নিজের কাঁধে নিয়েছেন। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, “সব দায় আমার।” পাশাপাশি পঞ্জাবের অধিনায়ক শ্রেয়সের ইনিংসই যে তাঁদের হারিয়ে দিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন মুম্বইয়ের অধিনায়ক। হার্দিক বলেন, “শ্রেয়স যে ভাবে ব্যাট করল তা এককথায় অসাধারণ। প্রয়োজনে ও ঝুঁকি নিয়েছে। তাতে সফলও হয়েছে। এই মাঠে ২০৩ রান খুব বেশি নয়। তাই বোলারদের কাজ অতটাও সহজ ছিল না। কিন্তু ওরা গোটা ইনিংসে আমাদের চাপে রাখল। তাতে বোলারেরা আরও বেশি খেই হারিয়ে ফেলল।”
মুম্বইয়ের হয়ে আইপিএলের নজর কাড়ার পরেই ভারতের জাতীয় দলে সুযোগ পান হার্দিক। মাঝে ২০২২ ও ২০২৩ সালে গুজরাত টাইটান্সে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে অধিনায়ক হিসাবে ২০২২ সালে চ্যাম্পিয়ন ও ২০২৩ সালে রানার্স করেন গুজরাতকে। ২০২৪ সালের আইপিএলের আগে হার্দিক ফেরেন মুম্বইয়ে। পাঁচ বারের আইপিএলজয়ী অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে সরিয়ে হার্দিককে অধিনায়ক করে তারা। এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা হয়েছিল। দলের মধ্যেই ভাঙন ধরেছিল। গত বার ঘরের মাঠে বিদ্রুপও শুনতে হয়েছিল হার্দিককে। তখনও কেঁদেছিলেন হার্দিক। এ বার অবশ্য সমর্থকেরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন। দলও একসঙ্গে খেলেছে। কিন্তু তার পরেও ফাইনালে উঠতে পারল না দল। সেই হতাশা থেকেই ভেঙে পড়লেন হার্দিক। মাঠেই তা দেখা গেল।