ঝলসানো ১৪-১৫ জনকে উদ্ধার করেছি, তখনও কেউ কেউ বেঁচে ছিলেন, দাবি করলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী

বাড়ির উঠোনে বসে রোদ পোহাচ্ছিলেন বিকাশ বুস্যাল। হঠাৎ তাঁর নজর গিয়েছিল পোখরা বিমানবন্দরের দিকে নেমে আসা একটি যাত্রিবাহী বিমানের দিকে। সেটি তখন খুব একটা উঁচুতে ছিল না। বিকাশ বলেন, “আচমকাই বিমানটি সামনের দিকে ঝুঁকে গিয়েছিল, তার পর দ্রুত গতিতে নীচের দিকে নেমে আসছিল। কয়েক সেকেন্ড। তার পরই কাছের পাহাড়ে বিকট একটা শব্দ পেলাম।” বিমান ভেঙে পড়তে যাঁরা দেখেছিলেন তাঁদের মধ্যে এক জন বিকাশ।

তাঁর দাবি, আওয়াজ পাওয়ার পরই বুঝেছিলেন কিছু একটা ঘটেছে। পাহাড় লক্ষ করে বিকাশ এগোতে থাকেন। বিমান ভেঙে পড়ার পর দুর্ঘটনাস্থলে প্রথম পৌঁছেছিলেন বলে দাবি বিকাশের। তাঁর কথায়, “আমার পায়ে চটিও ছিল না। আওয়াজ পেয়েই পাহাড়ের দিকে দৌড় দিয়েছিলাম। ওখানে পৌঁছেই প্রথম চোখ পড়েছিল এক তরুণীর দিকে। তাঁর দেহ জ্বলছিল। আমি তরুণীর কাছে ছুটে যাই। ওকে দূরে সরিয়ে আনি। তত ক্ষণে অনকেটাই ঝলসে গিয়েছিল তাঁর শরীর।”

ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন। বিকাশের দাবি, তিনি ১৪-১৫ জনকে ঝলসে যাওয়া অবস্থায় উদ্ধার করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের শ্বাসপ্রশাসও চলছিল। তার পরই পুলিশ এবং সেনা চলে আসে। ওঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তার পর ওঁদের কী হয়েছে জানি না।” বিকাশের অভিযোগ, অনেকেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন ঠিকই, কিন্তু উদ্ধারকাজে হাত লাগাননি। উল্টে তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ভিডিয়ো করতে ব্যস্ত ছিলেন। আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “বিমানটি বিমানবন্দরের কাছাকাছি বস্তিতে ভেঙে পড়ত। কিন্তু পাইলট বিমানের মুখ ঘুরিয়ে দেন পাহাড়ের দিকে। না হলে বহু মানুষের মৃত্যু হত।”

রবিবার সকালে পোখরা বিমানবন্দরে নামার ঠিক আগের মুহূর্তে ভেঙে পড়ে এটিআর-৭২ বিমানটি। তাতে ৭২ জন যাত্রী ছিলেন। বিমানটি কাঠামান্ডু থেকে পোখরা আসছিল। এই দুর্ঘটনায় এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত ৬৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.