‘শুভশক্তির হাতে অশুভের পরাজয়’। বিজয় দশমীর সকালে এক্স হ্যান্ডলে দেশবাসীকে শুভেচ্ছাবার্তা দিতে গিয়ে এ কথা লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সন্ধ্যায় দিল্লির দ্বারকা ১০ নম্বর সেক্টরের রামলীলা ময়দানে দশেরার প্রতীকী রাবণবধ উৎসবে তাঁর মুখ থেকে সরাসরি শোনা গেল অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গ।
মঙ্গলবার বিকেলে শ্রী রামলীলা সোসাইটি আয়োজিত দশেরা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন মোদী। সেখানে আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা বিশাল রামমন্দির নির্মাণের সাক্ষী হতে যাচ্ছি।’’ সেই সঙ্গে উল্লেখ করেন, রামমন্দির আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাসের প্রসঙ্গ। দিল্লির বিজেপি নেতা প্রবেশ সিংহ বর্মা আয়োজিত ওই দশেরা উৎসবে দেশ থেকে জাতপাত এবং আঞ্চলিকতাবাদ শেষ করারও আহ্বান জানান তিনি।
অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি অযোধ্যায় শ্রীরামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র মিশ্র আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে পারে। বিরোধীদের একাংশ মনে করছে, তার পরেই লোকসভা ভোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে।
রামমন্দির নির্মাণ এবং জাতপাত-আঞ্চলিকতার সীমানা অতিক্রমের পাশাপাশি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীয় বক্তৃতায় এসেছে চন্দ্রযানের সাফল্য, মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ এমনকি নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের প্রসঙ্গও। পাশাপাশি, উন্নত ভারত গড়ার লক্ষ্যে দেশবাসীকে ১০টি শপথ নেওয়ার আবেদন জানান তিনি। তার মধ্যে অন্যতম হল অন্তত একটি দরিদ্র পরিবারকে তার আর্থ-সামাজিক মর্যাদা বাড়াতে সহায়তা করা। এ ছাড়া, জল সংরক্ষণ, ডিজিটাল লেনদেন, স্বচ্ছতা বজায় রাখা, দেশে তৈরি জিনিস কেনা, পর্যটনের ক্ষেত্রে দেশকে অগ্রাধিকার দেওয়া, প্রাকৃতিক চাষ, বাজরা খাওয়া এবং ফিটনেস বজায় রাখার জন্য যোগাভ্যাস রয়েছে সেই তালিকায়।
প্রতি বছর বিজয় দশমীর দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হয় তির ছুড়ে প্রতীকী রাবণবধের উৎসব। অতীতেও দিল্লির বিভিন্ন স্থানে দশেরায় যোগ দিয়েছেন মোদী। কিন্তু আগে তাঁকে কখনও এ ভাবে দশেরায় দীর্ঘ রাজনৈতিক বক্তৃতা করতে শোনা যায়নি বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি। তাঁদের মতে পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোট এবং আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনই যে মোদীর ‘পাখির চোখ’, মঙ্গলবার তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।