গত কয়েক বছরে এলাকায় জনবসতি বেড়েছে কয়েক গুণ। সেই সঙ্গে ভূগর্ভস্থ জলস্তরও নেমেছে পাল্লা দিয়ে। এর ফলে তীব্র জলসঙ্কটে ভুগছে বারুইপুরের একাধিক পঞ্চায়েত এলাকা। সেখানে পাইপলাইনে জল আসে না, অগভীর নলকূপেও জল অমিল। ফলে খাওয়ার জন্য তো বটেই, দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্যও জল কিনতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের।
বারুইপুরের মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের বহু এলাকায় পরিস্থিতি এমনই যে, জল কেনা ছাড়া গতি নেই। উত্তরায়ণ, সুমন বেকারি লেন এলাকাতেও গরম বাড়তেই জলসঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। মল্লিকপুর স্টেশন সংলগ্ন ওই সমস্ত এলাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ শুরু হয়েছিল কয়েক বছর আগে। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্তমানে অনেক জায়গাতেই জল আসে না। কোথাও কোথাও জলের পরিমাণ অপ্রতুল। দৈনন্দিন কাজের জন্য অনেক বাড়িতে নলকূপ থাকলেও এলাকার জলস্তর নেমে যাওয়ায় ১০০-২০০ ফুটের সেই নলকূপ থেকেও জল উঠছে না।
পুর এলাকা সংলগ্ন এই সব জায়গায় গত কয়েক বছরে জনবসতি বেড়েছে কয়েক গুণ। ফলে জলসঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। বাসিন্দারা জানান, এলাকায় পঞ্চায়েতের বসানো গভীর নলকূপ থাকলেও তার উপরে নির্ভরশীল আশপাশের প্রায় কয়েকশো পরিবার। ফলে জল নিতে মারামারি-ধাক্কাধাক্কিও প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। এ নিয়ে প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। সুমন বেকারি লেনের বাসিন্দা আনন্দকুমার সাহা বলেন, “জলের সমস্যায় আমরা জেরবার। এলাকায় হু হু করে লোক বাড়ছে। বাড়ছে জলের সমস্যাও। পানীয় বা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য কার্যত কোনও জলের ব্যবস্থাই নেই। সবটাই কেনা জলের উপরে নির্ভরশীল।”
আর এক বাসিন্দা শ্যামলী দে বলেন, “পাইপলাইনে জল কখনও আসে, কখনও আসে না। এলেও সরু হয়ে পড়ে, কোনও কাজ হয় না। ফলে দিনে ৭০-৮০ টাকার জল কিনতে হয়।” এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বাড়িতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে জল তোলার চেষ্টা করছেন। তাতে সাময়িক ভাবে সমস্যা মিটলেও ভূগর্ভস্থ জলস্তরের বড়সড় ক্ষতি হচ্ছে বলেই আশঙ্কা এলাকার মানুষের।
এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কটের কথা মেনে নিয়ে মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হবিবুর রহমান বৈদ্য বলেন, “পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ জায়গায় জলের সমস্যা রয়েছে। গভীর নলকূপ বসিয়ে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ট্যাঙ্কারে জল পাঠানো যায় কি না, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলছি।” তিনি আরও জানান, ২০২৪ সালের মধ্যে বাড়ি-বাড়ি নতুন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।