শুক্রবার ‘স্ত্রী-যুক্ত’ হয়েছেন। শনিবার সকালে আর পাঁচটা দিনের মতোই নিউ টাউনে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ভোর সাড়ে ৫টার মধ্যে পৌঁছে যান ইকো পার্কে। সেখান থেকেই জানিয়ে দিলেন, স্ত্রীর সঙ্গে আলাপ ইকো পার্কে হয়নি। ইকো পার্কে হাঁটলে আদৌ কারও বিয়ে হয় না! বিয়ে যখন হওয়ার, তখনই হয়। বিয়ের পর রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও কোনও বদল আসবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন দিলীপ।
রিঙ্কুর সঙ্গে কি ইকো পার্কের প্রাতর্ভ্রমণেই আলাপ? দিলীপ বলেন, ‘‘এখানে কেন আলাপ হতে যাবে? ও মর্নিং ওয়াক করার লোক নয়। এখানে অনেকেই আসেন। উনি দলের অনেক পুরনো কর্মী। আমার চেয়েও পুরনো। এমনিই নানা জায়গায় দেখাসাক্ষাৎ হত। বিয়ের ব্যাপারটা হঠাৎ এসেছে, পরিস্থিতির কারণে। অনেকে বলছেন, ইকো পার্কে হাঁটলে বিয়ে হয়। সারা জীবন হাঁটলেও হবে না। বিয়ে যখন হওয়ার তখনই হবে।’’
শুক্রবার গোধূলি লগ্নে নিজের বাড়িতে বিয়ে সেরেছেন দিলীপ। পাত্রী রিঙ্কু মজুমদার বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী। দিলীপের জন্মদিন খাতায়কলমে ১ অগস্ট। কিন্তু তিথি মেনে প্রতি বছর ১৯ এপ্রিল তিনি জন্মদিন পালন করেন। দিলীপ নিজে অবশ্য সে ভাবে কোনও উদ্যাপনে বিশ্বাসী নন। তাঁর সঙ্গে প্রতি দিন যাঁরা প্রাতর্ভ্রমণে হাঁটেন, তাঁরাই বিয়ে এবং জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার ইকো পার্কে ছোটখাটো আয়োজন করেছিলেন। ৬টা বাজতে না বাজতেই তাঁরা হইহুল্লোড় শুরু করে দেন। কেউ বাড়ি থেকে পায়েস বানিয়ে এনেছিলেন। কেউ বাড়িতে বানানো কেক এনেছিলেন। কেউ আবার মিষ্টির দোকানে বিশেষ অর্ডার দিয়ে মিল্ককেক তৈরি করিয়ে এনেছিলেন। আনা হয়েছিল দইবড়াও। দিলীপ নিজে মিষ্টি তেমন খান না। জন্মদিনে কেকও কাটেন না। কিন্তু শনিবার ঘনিষ্ঠবৃত্তের আবদার মেটাতে মিষ্টি, কেক, পায়েস, দইবড়া সবই অল্প করে চেখে দেখেছেন। অন্যদেরও খাইয়ে দিয়েছেন। অবশ্য দিলীপ হাঁটতে বেরোলেও নববধূ ইকো পার্কে আসেননি। রীতি-আচার মেনে বিয়ের পরের দিন বাড়িতেই আছেন তিনি।
বিয়ে উপলক্ষে সম্পূর্ণ অনাড়ম্বর আয়োজন করেছিলেন দিলীপ। উপস্থিত ছিলেন গুটি কয়েক ঘনিষ্ঠ জন। তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও কোনও বদল আসেনি। শনিবারই দমদমে একটি মিছিল আছে। বিকেল ৫টায় দমদম সুভাষনগর ময়দান থেকে নাগেরবাজার পর্যন্ত মিছিল করবেন দিলীপ। রাতে খড়্গপুর যাবেন। সেখানেও জন্মদিন পালন করা হবে। খড়্গপুরে দিলীপ একটি বিয়েবাড়ির নিমন্ত্রণও রক্ষা করবেন। রবিবার সকালে চা চক্রে থাকবেন তিনি। সোমবার কলকাতা ফিরবেন।
শনিবার দিলীপ ঘোষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ এবং রিঙ্কু মজুমদারকে তাঁদের নতুন সূচনার জন্য শুভেচ্ছা। ভালবাসার নিজস্ব সময় নিজস্ব ছন্দ আছে। আপনাদের মিলন এই সত্যের প্রমাণ। সারাজীবনের জন্য আপনারা সুখে শান্তিতে একসঙ্গে থাকুন। জীবনের নতুন অধ্যায় সুন্দর হোক।’’