প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে বিএলও অ্যাপের মাধ্যমে ভোটারদের ছবি তুলতে হবে বিএলও-দের। ছবি তোলার প্রয়োজনে বিএলও-দের ফের ভোটারদের বাড়ি যেতে হবে। তবে এনুমারেশন ফর্মে স্পষ্ট ছবি থাকলে নতুন করে ছবি তোলার প্রয়োজন নাও হতে পারে। কমিশন এ-ও জানিয়ে দিয়েছে যে, ভোটারদের এনুমারেশন ফর্মে ছবি দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে কেউ চাইলে ফর্মে থাকা শূন্যস্থানে যে কোনও মাপের ছবি আটকাতে পারেন। যাঁদের ছবি তোলার জন্য পাওয়া যাবে না আপাতত তাঁদের পুরনো ছবি দিয়েই ফর্ম জমা পড়বে।
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যের প্রায় ৮০ লক্ষ ভোটারের এনুমারেশন ফর্ম সংগ্রহ করে সেগুলি ‘ডিজিটাইজ়’ করা হয়েছে। নকল বা ভুয়ো ভোটারদের আটকাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) পরিচালিত সফট্অয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। ভোটারের মুখের ছবির উপর সেটি কাজ করবে। সেই কারণেই নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে প্রত্যেক ভোটারের ছবি তুলতে বলা হচ্ছে বিএলও-দের।
সোমবার প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও যে বিষয়গুলি বলা হয়েছে, সেগুলি হল—
১) মৃত, স্থানান্তরিত, অথবা ভোটার তালিকায় দু’বার নাম রয়েছে, এমন ভোটারদের বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে হবে বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)-দের।
২) যে সব বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ) বিএলও-দের কাছে প্রতি দিন ৫০টি পর্যন্ত ফর্ম জমা দিচ্ছেন, তাঁদের জানাতে হবে ফর্মে দেওয়া তথ্য সঠিক। ভোটাররা যে তাঁর উপস্থিতিতে সই করেছেন, তা-ও জানাতে হবে বিএলএ-কে। এমনকি বিএলএ–র ফোন নম্বর, ঠিকানা, পার্ট নম্বর, সিরিয়াল নম্বর লিখতে বলা হয়েছে।

৩) এনুমারেশন ফর্মের অপব্যবহার করে ভোটার সম্পর্কে ভুল তথ্য দিলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে।
৪) বিএলও–রা ফর্মে দেওয়া তথ্য যাচাই করে সই করবেন। যদি যাচাই প্রক্রিয়ার পরেও ভুল থেকে যায়, তবে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে বিএলও-কে শাস্তি পেতে হবে।
৫) এনুমারেশন ফর্ম ‘ডিজিটাইজ়’ হওয়ার কারণে সব তথ্য, নথি, নাম, স্বাক্ষর, ছবি ডিজিটাল রেকর্ডে থাকবে। যে কেউ ভুল তথ্য দিলে বা ভুল করলে সহজে চিহ্নিত করা যাবে।
৬) ফর্মে ভুল থাকলে শুধু একটি দাগ টেনে কেটে দিতে বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে একই সারির খালি জায়গায় সঠিক তথ্য লিখতে হবে।
৭) ২০২৫-এর ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, অথচ এখনও এনুমারেশন ফর্ম পাননি, তাঁদের টোল ফ্রি নম্বর ১৯৫০ কিংবা ০৩৩-২২৩১-০৮৫০ নম্বরে ফোন করতে বলা হয়েছে। নিজের নাম, বিধানসভা কেন্দ্রের নাম, পার্ট নম্বর এবং সিরিয়াল নম্বর লিখে ৯৮৩০০৭৮২৫০ নম্বরে হোয়াট্সঅ্যাপও করা যাবে। যোগাযোগ করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
গত ৪ নভেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করা শুরু হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম দিয়ে আসছেন বুথ স্তরের আধিকারিকেরা। ২০০২ সালের ভোটার তালিকা দেখে সেই অনুযায়ী এই ফর্ম পূরণ করতে হচ্ছে। তার পর তা জমা নিয়ে কমিশনের নির্দিষ্ট অ্যাপে এই সংক্রান্ত তথ্য আপলোড করছেন বিএলওরা। রবিবার রাত ৮টার বুলেটিনে কমিশন জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ৯৯ শতাংশের বেশি এনুমারেশন ফর্ম বিলি হয়ে গিয়েছে।

