ভোট পরবর্তী হিংসা কোনো নতুন ঘটনা নয় বাংলায়। নির্বাচনের পর হিংসার ঘটনার অভিযোগ উঠেছে ভুরি ভুরি।২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট হোক বা ২১ সালের বিধানসভা ভোট, একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের একাধিক প্রান্তে। সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ভোটের ফলাফলের পরেও বাহিনী মোতায়েনের আবেদন জানিয়েছে মামলাকারীরা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে হাইকোর্ট।
শুধু পঞ্চায়েত ভোটে ভোট গ্রহণ বা গণনার দিনেই নয়, ফল ঘোষণার পর অন্তত ১০ দিন বাংলায় বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখতে হবে। বৃহস্পতিবার এই মর্মে নির্দিষ্ট করে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ।
পুরনো ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে মামলাকারীদের আইনজীবীরা এদিন হাইকোর্টে আবেদন করেন ভোটের ফল ঘোষণার পরেও অন্তত ১০ দিন থেকে দুই সপ্তাহ কেন্দ্রীয় বাহিনী এখানে মোতায়েন থাকুক। প্রধান বিচারপতি এটি শিবজ্ঞানম তাঁর নির্দেশ ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার অতীত দৃষ্টান্ত দেখে আদালত মনে করছে ভোটের পর অন্তত ১০ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে থাকা উচিত। এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যেনো তাদের অবস্থান পঞ্চায়েতের নোডাল অফিসারকে জানান। এখানে নোডাল অফিসার বলতে বিএসএফের আইজি পদমর্যাদার অফিসারকে বোঝানো হয়েছে। যিনি ফোর্সের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করছেন।
প্রধান বিচারপতি এই দিনের নির্দেশে আরও জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোটে ৪৪ হাজারের মতো পোলিং স্টেশন রয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর একটি পোস্ট যদি ৬ হাজারের বেশি হয় তাহলে প্রতিটি পোলিং স্টেশনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মজুত করতে হবে। পারলে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে হবে।
শুনানির সময় মামলাকারীদের আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, জেলা ভিত্তিক নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকরা সন্ধ্যের পর ফোন ধরছেন না। প্রার্থীদের উপর হামলা হচ্ছে, তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তারা অভিযোগ জানাতে পারছেন না। হাইকোর্ট জানিয়েছেন, এটা ঠিক যে পর্যবেক্ষকদের কিছুটা বিশ্রামের সময় দিতে হবে। তবে তাদের ফোন ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে, সেই সঙ্গে কন্ট্রোল রুম যেনো ঠিকমতো কাজ করে। প্রধান বিচারপতি তাঁর নির্দেশে আরো বলেন, আদালত আশা করছে গোটা ব্যবস্থাপনা সুচারু ভাবে কাজ করবে। তবে অনিয়মের কোনো অভিযোগ পেলে তাও যথাযথ খতিয়ে দেখা হবে।