রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হারের জন্য ঘুরিয়ে বিরাট কোহলিকেই দুষল রাজস্থান রয়্যালস! তাঁর মন্থর শতরানের জন্যই বেঙ্গালুরু জিততে পারেনি বলে কার্যত কটাক্ষ করেছে রাজস্থান। শনিবার বেঙ্গালুরুর ইনিংস শেষ হওয়ার পর সমাজমাধ্যমে রাজস্থানের একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। কোহলিকে কটাক্ষ করেছেন পাকিস্তানের জোরে বোলার জুনেইদ খানও।
শনিবার আইপিএলে নিজের অষ্টম শতরান করেছেন কোহলি। এ বারের প্রতিযোগিতায় প্রথম শতরান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই। জয়পুরের ২২ গজে কোহলি শতরান পূর্ণ করতে নিয়েছেন ৬৭ বল। যা আইপিএলের ইতিহাসে মন্থরতম শতরান। কোহলির ৭২ বলে অপরাজিত ১১৩ রানের ইনিংসের স্ট্রাইক রেট ১৫৬.৯৪। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নিরিখে খুব খারাপ নয়। তবু কোহলির শতরানের ইনিংসেই নাকি হারতে হয়েছে বেঙ্গালুরুকে।
কোহলির ইনিংসের সুবাদে শনিবার আরসিবি তোলে ৩ উইকেটে ১৮৩ রান। তার পরই সমাজমাধ্যমে ভেসে ওঠে রাজস্থানের পোস্ট। ছবিতে দেখা যাচ্ছে যুজবেন্দ্র চহাল ‘থাম্বস আপ’ দেখাচ্ছেন। সঙ্গে লেখা, ‘‘যে দিন ২০০-র বেশি রান হওয়া সম্ভব, সে দিন ১৮৪ রানের লক্ষ্য বেশ ভাল।’’ ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে ভাইরাল হয়েছে এই পোস্ট।
আইপিএলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিযোগিতার মন্থরতম শতরানের রেকর্ড এত দিন ছিল মণীশ পাণ্ডের দখলে। তিনি ২০০৮ সালে তৎকালীন ডেকান চার্জাসের বিরুদ্ধে ৬৭ বলে শতরান পূর্ণ করেছিলেন। সেই ম্যাচ হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নে। তার পর কোনও ব্যাটার আইপিএলে শতরান করতে এত বল খরচ করেননি। শনিবার কোহলিও ১০০ রান করতে ৬৭ বল নিয়েছেন। যা আইপিএলের ইতিহাসে মন্থরতম শতরানের তালিকায় যুগ্ম ভাবে শীর্ষে উঠে এসেছে। ভারতের মাটিতে আইপিএলে কোহলির শনিবারের শতরানই মন্থরতম।
শতরান করেও দলকে জেতাতে পারেননি কোহলি। ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মাঠে ছিলেন তিনি। তবু বেঙ্গালুরুর হারের অন্যতম প্রধান কারণ জশ বাটলারের আগ্রাসী শতরান। ইংল্যান্ডের সাদা বলের অধিনায়ক রাজস্থানের হয়ে শতরান করেছেন ৫৮ বলে। মেরেছেন ৯টি চার এবং ৪টি ছক্কা। শতরান পূর্ণ করতে কোহলির থেকে নয় বল কম খরচ করেছেন বাটলার। তাঁর এই ইনিংসে স্ট্রাইক রেট ১৭২.৪১। মূলত দুই শতরানের লড়াইয়েই পিছিয়ে পড়েছেন কোহলি। ম্যাচ হেরেছে বেঙ্গালুরু।
আইপিএলে কোহলি মন্থরতম শতরানের লজ্জার নজির গড়ায় কটাক্ষ এসেছে সীমান্তের ওপার থেকেও। পাকিস্তানের জোরে বোলার জুনেইদ সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘আইপিএলের ইতিহাসে মন্থরতম শতরান করার জন্য বিরাট কোহলিকে অভিনন্দন।’’ প্রতিপক্ষ দল সরাসরি তাঁর শতরানের কথা উল্লেখ না করলেও ছাড়েননি পাক ক্রিকেটার। তিনি সরাসরি কটাক্ষ করেছেন কোহলিকে।
তা হলে কোহলি কি নিজের কথা ভেবে খেলেছেন? দলের স্বার্থে ব্যাট করেননি? শনিবার শতরান করার পর তিনি বলেছেন, “কোনও ধরনের ভাবনা নিয়ে কখনও খেলতে নামি না। আক্রমণ করব না ধরে খেলব এই ভাবনা মাথাতেই থাকে না। আজ এক সময় ১০ বলে ১২ রান ছিল আমার। তখনও অতিরিক্ত আগ্রাসী হতে যাইনি। বোলারকে ভাবতে বাধ্য করেছি। বোলারেরা সব সময় চায় আমি যাতে শট খেলি এবং আউট হই। কিন্তু এত দিনে এটুকু অভিজ্ঞতা এবং পরিণত মানসিকতা আমার হয়েছে যাতে ওদের ভাবাতে পারি। আমি পরিবেশ এবং পিচ অনুযায়ী খেলি।” অর্থাৎ তাঁর ইনিংসের নেপথ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
জয় দিয়ে আইপিএল শুরু করেছিল বেঙ্গালুরু। পর পর তিন ম্যাচ হেরে কিছুটা চাপে ফ্যাফ ডুপ্লেসির দল। তৃতীয় হারের জন্য প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে আঙুল তোলা হচ্ছে কোহলির দিকে। কোহলির শতরানই কি খলনায়ক?