কৃষি সমবায় সমিতিগুলি হয়ে উঠছে আস্তে আস্তে ঘুঘুর বাসা। চাষিদের সার না দিয়ে বিভিন্ন সময় ঘুরপথে বাজারে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে চাষিদের সার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনির ৮ নম্বর গড়মাল গ্রাম পঞ্চায়েতের জাড়া মিরগা অঞ্চলের কৃষি সমবায় সমিতিতে চলছিল লুঠতরাজ। দাবিদাওয়া জানালে সমবায় সমিতির ম্যানেজার গ্রামবাসীদের দিত গালিগালাজ। তার নিজের পরিবারের সদস্যরাও চাষিদের হুমকি দিত দেখে নেওয়ার।
এতদিন বিনা রসিদে এমআরপি থেকে বেশি মূল্যে সার কিনতে হতো। পরে ম্যানেজার ও বাড়ির সদস্য মিলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সারের জন্য আধারের ছাপ সংগ্রহ করতো। সমিতির প্রকৃত সদস্য ও প্রান্তিক চাষিদের বঞ্চিত করে নিজের পছন্দ মতো লোকেদের সার বিক্রি করতো। শেষমেষ গত ৩ নভেম্বর এলাকার চাষিরা অভিযোগ জানান স্থানীয় বিডিও, ব্লক সমবায় দফতর, ব্লক কৃষি দপ্তর, জেলা কৃষি দপ্তর, জেলা সমবায় সমিতিতে এবং জেলা শাসকের দপ্তরে।
অভিযোগকারী চাষিরা জানান, সকলে ভালো ব্যবহার করলেও এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেও ব্লকের সমবায় আধিকারিক আপোষে নিজে এই সমবায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার নিত্যানন্দ রায়ের কাছে সমিতিতে উপস্থিত হয়ে সবকিছু মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। জেলা কৃষি দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, মেদিনীপুর সদর সাব- ডিভিশন ও শালবনী ব্লকের কৃষি আধিকারিককে সঙ্গে নিয়ে, ছুটির দিন সত্ত্বেও এই সমবায় সমিতিতে তিনি আসেন এবং ৪০ জন সদস্য চাষির অভিযোগ শুনে ও তাদের সাথে এই সমবায় সমিতির দায়িত্ব প্রাপ্তের দুর্ব্যাবহারের কথা শোনার পর মজুত রাসায়নিক সারের বস্তা ন্যায্য মূল্যে চাষিদের বিলি করেন। ভবিষ্যতে চাষিদের এক কপি রশিদ এবং নিজের কাছে এক কপি রশিদ রেখে স্বজনপোষন না করে সকলকে নিয়ে চলার ও সার দেওয়ার কথা বলেন এবং ম্যানেজার নিত্যানন্দ রায়কে শোকজ করেন। তিন দিনের মধ্যে শোকজের জবাব চান, অন্যথায় তিনি লাইসেন্স বাতিলের মতন সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান।
আধিকারিকের এই দ্রুত পদক্ষেপে এলাকার চাষিরা খুব খুশি। যদিও তারা ভয় পাচ্ছেন এই সমবায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির তরফে কতদিন স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।