প্রতারণার নতুন ফাঁদ! ঋণ না নিয়েও ঋণের জালে গ্রাম্য মহিলারা। প্রতিবাদে ঋণ প্রদানকারী সংস্থার এক কর্মীকে গ্রামে আটকে রেখে তুমুল বিক্ষোভ মহিলাদের। শুক্রবার দুপুরের এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের কৈগ্রাম এলাকায়। মারমুখী হয়ে ওঠেন উত্তেজিত মহিলারা। যদিও পরে বিক্ষোভকারী মহিলাদের সবরকমভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে কিছুটা হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন ওই বেসরকারী ঋণদানকারী সংস্থার ফিল্ড ম্যানেজার।
জানা গেছে, বালুরঘাট ব্লকের কৈগ্রাম এলাকায় বেশকিছু মহিলাকে ঋণ প্রদান করে পতিরামের একটি বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা। যাদের বিরুদ্ধেই আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন ওই গ্রামের একাধিক দুস্থ মহিলা। তাদের অভিযোগ, ঋণ না নিয়েও বেশ কয়েকজন মহিলাকে ঋণে জর্জরিত করে রেখেছে ওই বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা। যার জেরে চরম দুর্দশার মুখে পড়েছেন গ্রাম্য মহিলারা। একইসাথে ওই ঘটনার জেরে অন্য কোনও ব্যাঙ্ক থেকে ঋণও নিতে পারছেন না গ্রামের দুস্থ মহিলারা। শুধু তাই নয়, ঋণ পরিশোধ করবার মেয়াদ শেষ হবার পরেও ধারাবাহিকভাবে মহিলাদের কাছ থেকে একপ্রকার জোর করে টাকা তুলছে ওই ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মীরা, বলেও অভিযোগ।
এদিন দুপুরে ঠিক একইভাবে ওই ঋণ প্রদানকারী সংস্থার এক কর্মী গ্রামে পৌঁছে মহিলাদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চাপ দিতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মহিলারা। প্রতিবাদ জানিয়ে দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা ঘেরাও করে রাখা হয় ওই ঋণ প্রদান কারী সংস্থার এক কর্মীকে। যদিও পরবর্তীতে সংস্থার অপর এক কর্মীর উপর দায় চাপিয়ে বিক্ষোভকারী মহিলাদের সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন বিজয় কবিরাজ নামে ওই বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মী।
পুর্ণিমা চ্যাটার্জি, সীমা সরকার ও শিখা ওঁরাও–রা বলেন, লোন না নিয়েও তাদের নামে লোন হয়ে রয়েছে। চিকিৎসার জন্য ব্যাঙ্কে লোন করতে গিয়েই এই প্রতারণার ঘটনা তারা জানতে পেরেছেন। শুধু তাই নয়, লোন শোধ হয়ে যাবার পরেও তাদের কাছ থেকে জোর করে লোনের টাকা সংগ্রহ করছে অফিসাররা। যার প্রতিবাদেই এদিন ফিল্ড ম্যানেজারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তারা। ঘটনা নিয়ে উত্তম মহন্ত নামে এক অফিসারের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করবেন তারা।
বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার ওই কর্মী বিজয় কবিরাজ বলেন, অনেকে আগে লোন নিতে চেয়েছিলেন কিন্তু পরে তা বাতিল করলেও খাতা কলমে সেসময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ফিল্ড ম্যানেজার তা বাতিল করেননি। যে কারনেই এমন সমস্যায় পড়েছে গ্রামের বেশকিছু মহিলা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন তিনি।