কাজে লাগল না বরুণের ৫ উইকেট, পরিকল্পনাহীন ব্যাটিংয়ের খেসারত দিয়ে ২৬ রানে হার ভারতের

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে রাজকোটে খেলতে নেমেছিলেন সূর্যকুমার যাদবেরা। জিতলেই হাতের মুঠোয় চলে আসত সিরিজ়। কিন্তু ভারতের ব্যাটিং ব্যর্থতা লড়াইয়ে ফিরিয়ে দিল জস বাটলারদের। ইংল্যান্ডের ৯ উইকেটে ১৭১ রানের জবাবে ভারতের ইনিংস শেষ হল ৯ উইকেটে ১৪৫ রানে। ২৬ রানে হারল ভারত। সিরিজ়ে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকল ভারত।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মহম্মদ শামির প্রত্যাবর্নের ম্যাচে নায়ক বরুণ চক্রবর্তী। বাংলার জোরে বোলারকে সুখস্মৃতি উপহার দেওয়ার জন্য নিজেকে উজার করে দিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের স্পিনার। তাতেই ১ উইকেটে ৮৩ রান তুলে ফেলা জস বাটলারের দল ৮ উইকেটে ১২৭। ২৪ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিলেন বরুণ। তাঁর স্পিনের সামনে অসহায়ের মতো আত্মসমর্পণ করলেন ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ব্যাটারেরা। বাটলার (২৪), জেমি স্মিথ (৬), জেমি ওভারটন (শূন্য), ব্রাইডন কার্স (৩) এবং জোফ্রা আর্চারকে (শূন্য) পর পর আউট করে ম্যাচের প্রথমার্ধেই ভারতকে চালকের আসনে বসিয়ে দেন বরুণ। ইংল্যান্ডের ইনিংসের ১৪তম ওভারের তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে দুই জেমিকে আউট করে হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন। নজির গড়তে না পারলেও রাজকোটের ২২ গজে ইংরেজদের স্পিন বলের খেলার ক্ষেত্রে দুর্বলতা প্রকট করে দিলেন কেকেআরের স্পিনার। তবু ইংল্যান্ড লড়াই করার মতো রান করল বেন ডাকেট এবং লিয়াম লিভিংস্টোনের চেষ্টায়। ওপেন করতে নেমে ডাকেট করলেন ২৮ বলে ৫১। আর চাপের মুখে লিভিংস্টোনের ব্যাট থেকে এল ২৪ বলে ৪৩ রানের ইনিংস। পর পর উইকেট পড়ার মাঝে লিভিংস্টোনই দলের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত আদিল রশিদ (১০) এবং মার্ক উড (১০) অপরাজিত থাকেন।

ইংল্যান্ডকে প্রথম ধাক্কাটা দেন হার্দিক পাণ্ড্য। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই ফিল সল্টকে (৫) আউট করেন। পরে লিভিংস্টোনকে আউট করে স্বস্তি ফেরান ভারতীয় শিবিরে। বোলার হার্দিককে এ দিন বেশ বিপজ্জনক দেখাল। স্পিন সহায়ক উইকেটেও প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের শরীর লক্ষ্য করে একাধিক বাউন্সার দিলেন। ভাল বল করলেন অক্ষর পটেলও। ১৯ রানে ১ উইকেট তাঁর। ৩ ওভারে ২৫ রান দিয়ে উইকেট না পেলেও ৪৩৭ দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা শামিও বল হাতে বেমানান ছিলেন না।

জয়ের জন্য ১৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। সঞ্জু স্যামসন (৩) আবার ব্যর্থ। তিন নম্বরে নেমে দলকে ভরসা দিতে পারলেন না সূর্যকুমারও (১৪)। ভাল শুরু করেও আউট হয়ে গেলেন অভিষেক শর্মা (১৪ বলে ২৪)। আগের দিন শতরান করা তিলক বর্মাও (১৮) এ দিন পরাস্ত হলেন রশিদের স্পিনে। ম্যাচের দ্বিতীয় অর্ধে রাজকোটের ২২ গজে ব্যাট করা তুলনায় কঠিন হয়ে যায়। বল স্পিন করল বেশি। পিচের অসমান বাউন্সও সমস্যায় ফেলল ভারতীয় ব্যাটারদের। বিশেষ করে রশিদের অনেক বলেই ছিল বিপদের সম্ভাবনা। মাঝের ওভারগুলিতে হার্দিক এবং ওয়াশিংটন সুন্দরের মন্থর ব্যাটিং ভারতের কাজ আরও কঠিন করে দেয়। ওয়াশিংটন শেষ পর্যন্ত করেন ১৫ বলে ৬ রান। ২২ গজে অযথা বাঁহাতি-ডানহাতি ব্যাটার রাখার পরিকল্পনাও ভারতীয় দলের বিপক্ষে গিয়েছে।

শেষ দিকে হার্দিক এবং অক্ষর মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন ম্যাচের ফল অনুকূলে আনার। কিন্তু তত ক্ষণে একটু বেশিই দেরি হয়ে গিয়েছিল। আগ্রাসী হতে গিয়ে ওভারটনের বলে লং অফ বাউন্ডারির কাছে বাটলারের হাতে ধরা পড়ে গেলেন হার্দিক। ৩৫ বলে ৪০ রান করেন তিনি। অক্ষর করেন ১৬ বলে ১৫। হার্দিক আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের জয়ের আশাও শেষ হয়ে যায়। শামি প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে ব্যাট হাতে করলেন ৭ রান। ব্যর্থ ধ্রুব জুরেল (২)। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন রবি বিশ্নোই (১) এবং বরুণ (৫)।

ইংল্যান্ডের হয়ে ভাল বল করলেন রশিদ। তিনি ১৫ রানে ১ উইকেট নিলেন। তবে ইংরেজদের সফলতম বোলার ওভারটন ২৪ রানে ৩ উইকেট নিলেন। ২টি করে উইকেট আর্চার এবং কার্সের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.