১২ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর। অবশেষে দেখা মিলল উত্তরকাশির সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের। ১০ দিন পর আটকে পড়া শ্রমিকদের প্রথম ছবি পাওয়া গেল। গতকাল রাতে একটি ক্যামেরাকে ৬ ইঞ্চি পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গের ভিতরে পাঠানো হয়। যে ক্যামেরার মাধ্যমেই পাওয়া গিয়েছে আটকে পড়া শ্রমিকদের ছবি। পাশাপাশি, ওই পাইপের মাধ্যমে কাঁচের বোতলে করে গতকাল প্রথমবার শ্রমিকদের জন্য গরম খাবার পাঠানো সম্ভব হয়। গতকাল রাতে শ্রমিকদের জন্য পাঠানো হয় খিচুড়ি। এতদিন পর্যন্ত সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের জন্য পাঠানো হচ্ছিল ড্রাই ফ্রুটসের মতো শুকনো খাবার ও জল।
জানা গিয়েছে, একটি এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরা পাঠানো হয়েছিল ৬ ইঞ্চি পাইপের মাধ্যমে। এর আগে আটকে পড়া শ্রমিকদের খোঁজ পাওয়ার জন্য সুড়ঙ্গের ভিতরে ড্রোন পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি। সুড়ঙ্গের ভিতর ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দিয়ে বেশি দূর এগোতে পারেনি ড্রোন। একটি ড্রোন খারাপ-ই হয়ে যায়! এবার এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরায় ধরা পড়ল আটকে পড়া শ্রমিকদের ছবি। ছবিতে শ্রমিকদের হেলমেট ও কাজের পোশাক পরা অবস্থায় দেখা গিয়েছে। ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে তাঁরা হাতও নাড়েন। শ্রমিকরা জানান যে, কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তাঁরা ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। ওয়াকি টকিতে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে কথাও বলেন উদ্ধারকারী দলের আধিকারিকরা। শ্রমিকদের বলা হয়, ‘আপনারা ক্যামেরার সামনে এসে ওয়াকি টকিতে কথা বলুন।’
আটকে পড়া শ্রমিকদের প্রথম ছবি সামনে আসার পর সেই ছবি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। তিনি লিখেছেন, “এই প্রথমবারের জন্য, উত্তরকাশির সিলকিয়ারাতে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে পরা শ্রমিকদের ছবি সামনে এসেছে। সমস্ত শ্রমিকরা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত আছেন। তাঁদেরকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুস্থ অবস্থায় বাইরে বের করে আনার জন্য আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছি।” উদ্ধারকারী দলের প্রধান কর্নেল দীপক পাটিল জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি আটকে পরা শ্রমিকদের কাছে মোবাইল ফোন এবং চার্জারও পাঠানো হবে পাইপের মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, আজ থেকেই উপর থেকে সুড়ঙ্গে ড্রিল করা শুরু হবে। উপর থেকে ড্রিল করে সুড়ঙ্গ থেকে আটকে পরা শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। সিলকিয়ারার দিক থেকেই শুরু হবে লম্বালম্বি বা ভার্টিকাল ড্রিলিং। ২৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সুড়ঙ্গের ভিতর আটকে রয়েছেন শ্রমিকরা। বিভিন্ন রাজ্যের মোট ৪১ জন শ্রমিক আটকে রয়েছেন। আটকে পরা শ্রমিকদের মধ্যেও বাংলারও ৩ জন রয়েছেন। সুড়ঙ্গের ভিতর আটকে পরেছেন কোচবিহারের তুফানগঞ্জের মানিক তালুকদার, হুগলির পুরশুড়ার নিমডিঙির জয়দেব প্রামাণিক ও হরিণাখালির সৌভিক পাখিরা। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় প্রহর গুনছে তাঁদের পরিবার।