তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে ফের উত্তেজনার পারদ চড়ছে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে। চিনের উদ্বেগ বাড়িয়ে তাইওয়ান প্রণালী ধরে যৌথ সামরিক মহ়ড়া চালাচ্ছে আমেরিকা এবং কানাডা। চিনের তরফে প্রাথমিক ভাবে এটাকে ‘চমক’ বলা বলা হলেও একই সঙ্গে আমেরিকার নাম না করে এটাও জানানো হয়েছে যে, কোনও রকম প্ররোচনা সৃষ্টির চেষ্টা হলে কিংবা তাদের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে, পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে তারা।
সামরিক নৌবহর নিয়ে চালানো এই মহড়া প্রসঙ্গে আমেরিকার নৌবাহিনীর সপ্তম নৌবহরের তরফে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন মেনেই তাইওয়ান প্রণালী ধরে এগিয়ে যাবে আমেরিকা এবং কানাডার রণতরী। এই প্রসঙ্গে কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনিতা আনন্দ একটি বিবৃতিতে বলেছেন, “আজ এই রুটিন মহড়ার মাধ্যমে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে মুক্ত, অবাধ এবং স্বাধীন রাখার যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছি, তা রক্ষা করছি মাত্র।”
প্রসঙ্গত, স্বশাসিত তাইওয়ান, তাইওয়ান প্রণালীর মাধ্যমে চিনের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। চিন আগাগোড়াই তাইওয়ানকে তাদের নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করলেও, আমেরিকা সর্বদাই তাইওয়ানের স্বশাসনকে বিশেষ স্বীকৃতি দিয়ে এসেছে। কিছু দিন আগেই আমেরিকার হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। চিন পেলোসির সফরকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘অযথা হস্তক্ষেপ’ হিসাবেই দেখেছিল। অপর দিকে তাইওয়ান প্রণালীকে আন্তর্জাতিক জলপথ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য আমেরিকাও দীর্ঘ দিন ধরে উদ্যোগ নিয়ে এসেছে। এই বিষয়ে চিনের আপত্তি এবং হুঁশিয়ারিকে কার্যত অগ্রাহ্য করেই সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স এবং অস্ট্রেলিয়ার নৌবহর তাইওয়ান প্রণালী ধরে রুটিন মহড়া চালিয়েছে। দক্ষিণ চিন সাগরেও চিনের একাধিপত্যকে খর্ব করতে চাইছে আমেরিকা এবং পশ্চিমী দেশগুলির একটা বড় অংশ।
শেষ বার প্রায় ১১ মাস আগে আমেরিকা এবং কানাডার নৌবাহিনী তাইওয়ান প্রণালী ধরে যৌথ মহড়া চালিয়েছিল। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিছু দিন আগেই এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, চিন তাইওয়ানের উপর আগ্রাসন চালালে, আমেরিকা তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াবে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বাইডেন এই বক্তব্য জানানোর পরেই, তাইওয়ান প্রণালীতে মহড়া চালায় আমেরিকা এবং কানাডার রণতরী।