UPSC: পণ চেয়ে অত্যাচার, মেয়ে আগলে লড়াই বিবাহবিচ্ছেদের! সেই শিবাঙ্গী এ বার আইএএস

শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার, স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ, কোনও কিছুই টালাতে পারেনি শিবাঙ্গী গয়ালের লক্ষ্যকে। নিজের লক্ষ্যে অটল থেকেই আজ তিনি দেশের এক জন আমলা। এ বারের ইউপিএসসি পরীক্ষায় তাঁর র‌্যাঙ্ক ১৭৭।

উত্তরপ্রদেশের হাপুড়ের পিলখুয়ার বাসিন্দা শিবাঙ্গী। তাঁর সাত বছরের একটি মেয়েও আছে। স্কুলে পড়াকালীনই আমলা হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন শিবাঙ্গী। স্কুলজীবন শেষে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। কলেজে পড়ার সময় ইউপিএসসি পরীক্ষা দেন। কিন্তু ব্যর্থ হন।

কলেজজীবন শেষ হতেই বিয়ে হয়ে যায় শিবাঙ্গীর। নতুন জীবনে প্রবেশ করেন। কিন্তু এই জীবন খুব একটা সুখকর হয়নি। শিবাঙ্গীর দাবি, বিয়ের পর পরই পণ চেয়ে শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচার শুরু হয়। এ ভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকে। একটি কন্যাসন্তানও হয় শিবাঙ্গীর। সংসারের পাকে পড়ে তাঁর স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছিল। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন তিনি।

বাপের বাড়িতেই মেয়েকে বড় করে তোলার পাশাপাশি নিজের স্বপ্নকে সাকার করার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। ২০১৯-এ ফের ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। ইতিমধ্যেই তাঁর স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা শুরু হয়। এক দিকে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা, অন্য দিকে মেয়েকে বড় করা, তার সঙ্গে পরীক্ষার প্রস্তুতি— যেন একটা চক্রব্যূহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই চক্রব্যূহে থেকেই লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন শিবাঙ্গী। এই লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি শক্তি জুগিয়েছে তাঁর মেয়ে। শিবাঙ্গী জানান, মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়েই তিনি দিনরাত এক করে আমলা হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। তাই বার বার ব্যর্থ হয়েও আজ তিনি দেশের এক জন আইএএস।

নিজের লড়াইয়ের দিনগুলির কথা স্মরণ করে শিবাঙ্গী বলেন, “শ্বশুরবাড়িতে যে সব মহিলারা অত্যাচারিত হচ্ছেন, তাঁদের বলতে চাই আপনারা ভয় পাবেন না। তাঁদের দেখিয়ে দিন যে, আপনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম। তাঁদের বুঝিয়ে দিন, মহিলারা অনেক কিছু করতে পারেন। নিজের কঠোর অধ্যবসায়ে আপনিও এক জন আইএএস হতে পারেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.