বারাবার শ্লীলতাহানি, হুমকি। অপমার সহ্য করতে না পেয়ে আত্মঘাতী নির্যাতিতা। সুইসাইড নোটে লিখে গেলে চার অভিযুক্তের নাম। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার চার যুবক লাগাতার হেনস্থা করছিলেন ওই কিশোরীকে। দিন দশেক আগে বাড়ির সামনে তাঁরা ওই কিশোরীর শ্লীলতাহানিও করেন বলে অভিযোগ। মেয়েটির পরিবারের তরফে সেই নিয়ে থানায় অভিযোগও জানানো হয়েছিল।
পুলিস জানিয়েছে, ওই রাতেই বিষ খায় ওই ছাত্রী। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে মারা যান নির্যাতিতা। সুইসাইড নোটে বলা হয়েছে, কুন্দারকি থানায় তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে হেনস্থাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে, ওই চার যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ তো করেইনি, অভিযোগের কর্ণপাতও করেনি বলে অভিযোগ।
মৃত্যুর আগে দুই পৃষ্ঠার একটি সুইসাইড নোট লেখেন তিনি ৷ তাতে স্পষ্টভাবেই চারজনের নাম উল্লেখ করে তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিসকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান ৷ নোটে ওই ছাত্রী লেখে, ”এরা বড়লোক। ওদের সঙ্গে আর লড়াই করার সাহস নেই, কিন্তু আমার পরিবারের যেন কষ্ট না হয়। স্যার, আপনি কি এবার আমার কথা শুনবেন? আমার মৃত্যুর পর এই মানুষদের এমন শাস্তি দেওয়া উচিত যাতে দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা বাঁচতে পারে এবং তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।”
ওই ছাত্রী নোটে চারজনের নাম উল্লেখ করেছে – বিকেশ, প্রমোদ, বাবলু, এবং হরজ্ঞান। তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছে। অভিযোগ ওই যুবকেরা তাঁর ভিডিও করে এবং আমার অসহায়তার সুযোগ নেয়, কারণ আমার পরিবার গরিব। মেয়েটির পরিবারের এক সদস্য জানান, হোলির দিন ওই চার ব্যক্তি তার বাড়িতে এসে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। আমরা তখন বাড়িতে ছিলাম না। পরে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলে সে বারবার হুমকি দিতে থাকে।
তবে অভিযোগ করা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি পুলিস। দায়িত্বরত সাব-ইন্সপেক্টর শচীন মালিককে কর্তব্যে গাফিলতির জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। নোটে নাম থাকা চারজনের মধ্যে দুজনকে এখন গ্রেফতার হয়েছে। এসএসপি হেমরাজ কুমার মীনা জানিয়েছেন, ৩৫৪ (মহিলার শালীনতা নষ্ট করা), ৫০৪ (ইচ্ছাকৃত অপমান), ৫০৬ (অপরাধমূলক ভয় দেখানো) ধারায় এবং পকসো আইনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।