শিয়ালদহে ট্রেনের ধাক্কাকাণ্ডে এক চালককে সাসপেন্ড করল রেল। প্রাথমিক তদন্তে রেল কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছেন, যান্ত্রিক কোনও গোলযোগের কারণে ওই দুর্ঘটনা ঘটেনি। বরং তার পিছনে রয়েছে সিগন্যাল অমান্য করার মতো কারণ। সেই অমান্য করার কারণেই ওই চালককে প্রাথমিক ভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট এলে বাকি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে কারশেডমুখী একটি ফাঁকা ট্রেনের সঙ্গে রানাঘাটগামী একটি যাত্রিবাহী ট্রেনের ধাক্কা লাগে। সেই ধাক্কার তীব্রতা খুব বেশি না হওয়ায় বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে কারশেডমুখী ফাঁকা ট্রেনটির একটি চাকা ভেঙে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রানাঘাটগামী ট্রেনের কেবিনের একটি দরজাও। ক্ষতি হয় রেললাইনেরও। ঘটনাটি কী ভাবে ঘটেছে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রেল অবশ্য প্রথম থেকেই যান্ত্রিক ত্রুটির পাশাপাশি মানব-ত্রুটির কথাও বলছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কারশেডগামী ট্রেনের চালকের ভুলেই ওই দুর্ঘটনা।
রেল সূত্রে খবর, সিগন্যাল অমান্য করেই এগিয়ে গিয়েছিলেন কারশেডগামী ট্রেনের চালক। তাতেই বাধে বিপত্তি। ‘সান্টিং লোকো পাইলট’ সিগন্যাল মানেননি বলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে রেল। কারণ, যান্ত্রিক কোনও গোলযোগের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তবে রেল জানিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট এলে বাকিটা বোঝা যাবে। বিষয়টিকে ‘সিগন্যাল পাস্ড অ্যাট ডেঞ্জার’-এর ঘটনা বলেও উল্লেখ করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
‘সিগন্যাল পাস্ড অ্যাট ডেঞ্জার’ রেলের পরিভাষায় অতিপরিচিত শব্দবন্ধ। বিপদ সঙ্কেত অর্থাৎ লাল সিগন্যাল না মেনে চালক যদি ট্রেন নিয়ে এঘিয়ে যান, তখন তাকে বলা হয় ‘সিগন্যাল পাস্ড অ্যাট ডেঞ্জার’। অতীতে এমন সিগন্যাল অমান্য করায় বড়সড় রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকি, সেই সব দুর্ঘটনায় অনেক রেলযাত্রীর মৃত্যুও হয়েছে। ২০১০ সালে ‘সিগন্যাল পাস্ড অ্যাট ডেঞ্জার’-এর ঘটনায় মধ্যপ্রদেশে ২৩ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। জখম হয়েছিলেন ৩০ জন। মধ্যপ্রদেশের বদরবাসে একটি মালবাহী গাড়ির সঙ্গে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ধাক্কায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।