কসবাকাণ্ডে গ্রেফতার আদর্শের দুই সঙ্গী, ফাঁদ পেতেই কি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হোটেলে? জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা

কসবার হোটেলে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল দু’জনকে। ধৃতদের নাম ধ্রুব মিত্র এবং কমল সাহা। রবিবার দুপুরে তাঁদের পাকড়াও করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, কসবা থানায় জেরা করা হচ্ছে ধৃত দু’জনকে। শুক্রবার রাতে হোটেলের ঘরে কী হয়েছিল, তা নিয়ে এত দিন ধোঁয়াশায় ছিলেন তদন্তকারীরা। এ বার নিহত আদর্শ লোসাল্কার দুই সঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সে বিষয়ে বিশদ তথ্য পেতে পারেন তদন্তকারীরা।

শনিবার কসবার হোটেলের ঘর থেকে আদর্শের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বীরভূমের বাসিন্দা ওই যুবক কর্মসূত্রে থাকতেন কলকাতাতেই। শুক্রবার রাতে আদর্শ ওই হোটেলে ওঠেন। তাঁর সঙ্গে আরও দু’জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন তরুণী। মোট দু’টি ঘর নেওয়া হয়েছিল। পরিবারের দাবি, একটি ঘরে ছিলেন আদর্শ। অন্য দু’টি ঘরে ছিলেন বাকি দু’জন। সূত্রের খবর, শুক্রবারই গভীর রাতে আদর্শের ওই দুই সঙ্গী হোটেল ছাড়েন। এর পরে শনিবার হোটেলের ঘরে আদর্শের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

দেহ উদ্ধার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এ বার গ্রেফতার হলেন দুই সঙ্গী। তাঁদের সঙ্গে আদর্শের আলাপ কী ভাবে, তা-ও জেরা করে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। কী উদ্দেশ্যে তাঁরা হোটেলে গিয়েছিলেন, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, নিহত যুবক ডেলিভারির কাজ করতেন। এই তিন জনের মধ্যে অন্তত দু’জনের সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কি লুটের উদ্দেশে আদর্শকে হোটেলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল? সেই মতোই কি ফাঁদ পাতা হয়েছিল হোটেলের ঘরে? এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

হোটেলের ওই ঘরে মেঝেতে পড়ে ছিল যুবকের দেহ। তাঁর নাকের কাছে রক্ত ছিল বলে জানা যাচ্ছে। এমনকি তাঁর পা-ও বাঁধা ছিল। কিন্তু কেন পা বাঁধা ছিল, সেই তথ্য এখনও অজানা। শ্বাসরোধেরও চেষ্টা হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। যদি কী কারণে তাঁর মৃত্যু হল, তা-ও এখনও স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরই এটি স্পষ্ট হতে পারে বলে দাবি পুলিশ সূত্রের।

তবে আদর্শকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে নেপথ্যে কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে, তা-ও খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। শনিবার আদর্শের দেহ উদ্ধারের পর থেকেই তাঁর দুই সঙ্গীর খোঁজ চালাচ্ছিলেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, নিখোঁজ দু’জনের মধ্যে তরুণী কলকাতাতেই থাকেন। যুবকের বাড়ি নদিয়ায়।

নিহত যুবকের পরিবারের দাবি, হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ কী রয়েছে, তা তাঁরা জানতে পেরেছেন। পরিবারের বক্তব্য, শুক্রবার রাতে আদর্শকে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে সঙ্গীদের ঘরে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু ওই দুই সঙ্গীর সঙ্গে আদর্শের কী রকম সম্পর্ক, তা বলতে পারেননি পরিবারের সদস্যেরা। আদর্শ এবং তাঁর দুই সঙ্গী পূর্বপরিচিত ছিলেন কি না, তা নিয়ে তদন্তকারীরাও এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.