সোমবার ব্যাডমিন্টন থেকে ভারতের ঘরে এল আরও দু’টি পদক। মহিলাদের ব্যাডমিন্টনের এসইউ৫ বিভাগে রুপো পেলেন তুলসীমতি মুরুগেসন। ব্রোঞ্জ জিতেছেন মণীষা রামদাস। এ দিন সকালেই ব্যাডমিন্টনে সোনা এসেছিল নীতেশ কুমারের হাত ধরে। প্যারালিম্পিক্সে সব মিলিয়ে ভারতের পদকসংখ্যা দাঁড়াল ১১।
২২ বছরের তুলসীমতি প্রতিযোগিতায় প্রথম বাছাই ছিলেন। তিনি ১৭-২১, ১০-২১ গেমে হেরে যান চিনের ইয়াং কিউশিয়ার কাছে। লড়াই-ই করতে পারেননি ভারতের খেলোয়াড়। দ্বিতীয় বাছাই মণীষা একই সময়ে পাশের কোর্টে খেলছিলেন। তিনি ডেনমার্কের ক্যাথরিন রোসেনগ্রেনকে ২১-১২, ২১-৮ গেমে হারিয়ে দেন।
এসইউ৫ বিভাগে লড়েন সেই সব প্রতিযোগীরা, যাঁদের শরীরের উপরিভাগে, অর্থাৎ হাতে সমস্যা রয়েছে। রুপো পেয়ে তুলসীমতি বলেন, “আমি বেশ হতাশ। নিজের সেরাটা দিতে পারিনি। তবে রুপো পেয়ে ভাল লাগছে। আমি সোনা হারাইনি, রুপো জিতেছি। অনেক ভুল করেছি। একটা সময় তিন পয়েন্টে এগিয়েছিলাম। প্রথম সেট জিততেই পারতাম। এক-দু’পয়েন্টের তফাতে ম্যাচ বেরিয়ে গেল। তার পরেও একের পর এক আনফোর্সড এরর করেছি।”
ছোটবেলা থেকে বাঁ হাতে সমস্যা রয়েছে তুলসীমতির। মাঝেমাঝেই সেই হাতে ব্যথা করে। কিন্তু তাঁর বাবা ক্রীড়াপ্রেমী। তিনি নিজে বাস্কেটবল খেলেছেন। মেয়েদেরও খেলাধুলোর সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছেন ছোটবেলা থেকেই। তুলসীকে কখনও বিশ্বাস করতে দেননি তাঁর কোনও সমস্যা রয়েছে। সাধারণ ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন তুলসী। তাঁর হাতের চিকিৎসা করার অনেক চেষ্টা হয়েছে। অবশেষে ব্যর্থ হয়ে তুলসীর বাবা সিদ্ধান্ত নেন, মেয়েকে প্যারা-অ্যাথলিটই বানাবেন।
দারিদ্রের মধ্যে দিয়েই বড় হয়েছেন তুলসী। বাবা সিনেমার সেটে জোগাড়ের কাজ করেন। সমস্ত সঞ্চয় ব্যয় করেছেন দুই মেয়ের জন্য। তবে দারিদ্রের জীবন নিয়ে কোনও দিন অভিযোগ করেননি তুলসী। পুষ্টি ভরা খাবার পেতেন না। তাতেও দিনের পর দিন অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছেন। ছোটবেলা থেকে কঠোর পরিশ্রম এবং দারিদ্রের সঙ্গে বোঝাপড়াই তুলসীকে আজ এই জায়গায় নিয়ে এসেছে।