পুলিশের অনুমতি না মেলায় ফের বাঁকুড়ার কোতুলপুরে বাতিল হল শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচি। শুক্রবার দুপুরে কোতুলপুরে পদযাত্রা করার কথা ছিল বিরোধী দলনেতার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রশাসন ওই কর্মসূচিতে অনুমতি না দেওয়ায় তা বাতিল বলে ঘোষণা করে বিজেপি। এর আগে গত ১ নভেম্বর একই কারণে কোতুলপুরে পৌঁছেও বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে হাজির হতে পারেননি শুভেন্দু। সে দিনই তিনি ১৭ নভেম্বরের কর্মসূচির করার কথা ঘোষণা করেছিলেন।
গত ২৬ অক্টোবর কোতুলপুরের বিজেপি বিধায়ক হরকালী প্রতিহার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। কোতুলপুরের বিধায়কের এই শিবির বদলের পরেই কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে গত ১ নভেম্বর কোতুলপুরের মোহিনীমোহন ময়দানে বিজয়া সম্মিলনীর ডাক দেয় বিজেপি। ওই সম্মেলনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় পরে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। বিজেপির আশা ছিল, শেষ মুহুর্তে হলেও আদালতের তরফে অনুমতি মিলবে। কিন্তু বাঁকুড়া পুলিশের কাছ থেকে ময়দানে প্রবেশ ও বাহিরের একমাত্র পথের যুক্তি শুনে শেষ মুহুর্তে অনুমতির আবেদন বাতিল করে আদালত। এ দিকে সম্মেলন শুরু হওয়ার পর আদালত অনুমতির আবেদন বাতিল করায় মাঝপথে রণে ভঙ্গ দিতে হয় বিজেপিকে। শুভেন্দু ওই দিন কোতুলপুরে পৌঁছে গেলেও আদালত অনুমতি না দেওয়ায় আর সভামুখো হননি। দলীয় কর্মীদের নিয়ে স্থানীয় একটি লজ থেকে তিনি বাজার পরিক্রমা করে নেতাজি মোড় পর্যন্ত যান। কোতুলপুর ছাড়ার আগে সেই দিনই শুভেন্দু ঘোষণা করেন, আগামী ১৭ নভেম্বর তিনি কোতুলপুরে পদযাত্রা করবেন। কিন্তু এ বারও সেই কর্মসূচির অনুমতি না মেলায় এক দিন আগেই তা বাতিল করা হল।
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা বলেন, ‘‘১৭ নভেম্বর কর্মসূচির অনুমতির জন্য কোতুলপুর থানার পুলিশের কাছে গত ৩ নভেম্বর আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ সেই আবেদন ১০ নভেম্বর বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসকের কাছে পাঠিয়েছে। তার পর দীর্ঘ টালবাহানার পরও আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে বিরোধী দলের কর্মসূচির অনুমতি আটকে দিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। শেষ পর্যন্ত অনুমতি না মেলায় আমরা শুক্রবারের কর্মসূচি স্থগিত রাখছি। আগামী দিনে প্রয়োজনে আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে এই কর্মসূচি হবে।’’ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা। তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সারা রাজ্যের কোথাও শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচিতে লোক হচ্ছে না। তাই কোনও না কোনও বাহানায় বিজেপিকে কর্মসূচি বাতিল করতে হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসন আইন কানুন মেনেই কাজ করছে। অনুমতি দেওয়া বা না দেওয়ার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’