কংক্রিটের আস্তরণের মধ্যে আটকে থাকা টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘চণ্ডী’কে আগেই দেখা গিয়েছিল। টানা কয়েক মাস চেষ্টার পরে তার বাইরের আবরণের কাছাকাছি পৌঁছতে পেরেছিলেন
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাণ সংস্থার কর্মীরা। এ বার চণ্ডীর ইস্পাতের বর্ম কেটে তাকে বার করে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মেট্রো সূত্রের খবর, এই কাজে আরও প্রায় মাস দুয়েক সময় লাগতে পারে।
মেট্রোর আধিকারিকেরা বলছেন, দুর্ঘটনার পরে নীচের দিকে প্রায় দেড় মিটার ঝুঁকে যাওয়া চণ্ডীকে উদ্ধারের কাজ খুব সহজ নয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই টানেল বোরিং মেশিনটি উদ্ধার করা গেলে বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জট অনেকটা কাটবে। তার পরে শুরু হবে আর একটি টিবিএম ‘উর্বী’কে উদ্ধারের প্রক্রিয়া। তবে উর্বীর ইস্পাতের বাইরের আবরণ শেষ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের অংশ হয়েই থেকে যাবে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের সময়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল চণ্ডী। খননকাজ চলার সময়ে জলের তোড়ে বিপুল পরিমাণ মাটি ধুয়ে এসে সুড়ঙ্গে ঢুকতে শুরু করায় আশপাশের এলাকায় ধস নামে। ফাটল দেখা দেয় একাধিক বাড়িতে। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে চণ্ডীকে ভূগর্ভে রেখেই সুড়ঙ্গের একাংশ দেওয়াল তুলে বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাটি ও বালি যাতে ওই অংশে ঢুকে আসতে না পারে, তার জন্য তীব্র চাপে সেখানে জল ভর্তি করা হয়। ওই জায়গার নরম মাটি যাতে থিতিয়ে যেতে পারে, সে জন্য এর পরে মাটির উপর থেকে ওখানে কংক্রিট এবং রাসায়নিকের মিশ্রণ ঢালা হয়। সেই মিশ্রণই ধীরে ধীরে চুঁইয়ে পড়ে টিবিএম চণ্ডীর চার পাশে শক্ত আবরণ তৈরি করে।
এই অবস্থায় পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ স্থগিত রেখে বেশ কয়েক মাস পরে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরু করেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। শিয়ালদহ পর্যন্ত সুড়ঙ্গ খুঁড়ে সেই কাজ সম্পূর্ণ করে উর্বী। এর পরে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার অভিমুখে চণ্ডীর অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে নামানো হয় উর্বী-কে। মেট্রো সূত্রের খবর, আপাতত বৌবাজারে দু’টি টিবিএম মুখোমুখি অবস্থায় রয়েছে। চণ্ডীকে উদ্ধারের পরে উর্বীর সামনের অংশ বা ‘কাটার হেড’ কেটে তাকে বার করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।