ইউরোপের ‘বন্ধু’ দেশ রাশিয়ার তেল কিনলে ট্রাম্পের আপত্তি নেই! যুক্তিও দিলেন তাদের হয়ে, শুধু ভারত নিয়ে ফের সেই দাবি

ভারত শীঘ্রই রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনা বন্ধ করে দেবে। শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে ফের সেই দাবি করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ইউরোপের এক ‘বন্ধু’ দেশ একই কাজ করলেও তাদের পাশে দাঁড়ালেন তিনি। কেন তারা রাশিয়ার তেল কিনতে বাধ্য হচ্ছে, তার যুক্তি দিলেন। ভারত সম্পর্কে ট্রাম্পের একতরফা মনোভাব কেন, শুক্রবারের মন্তব্যের পর ফের প্রশ্ন উঠছে।

ইউরোপের হাঙ্গেরি আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোর সদস্য। তারা রাশিয়ার খনিজ তেলের উপর নির্ভরশীল। ট্রাম্প তাদের হয়ে যুক্তি দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘হাঙ্গেরি একপ্রকার ফেঁসে আছে। কারণ, ওদের একটাই পাইপলাইন আর সেটা বছরের পর বছর ধরে রয়েছে। ওরা স্থলভাগে ঘেরা দেশ। কোনও সমুদ্র নেই। ফলে ওদের পক্ষে তেল পাওয়া কঠিন। আমি সেটা বুঝি।’’ যদিও হাঙ্গেরি রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করে দেবে বলে ট্রাম্প আশ্বস্ত করেছেন। বলেছেন, ‘‘ওরা ইতিমধ্যে অনেকটা কমিয়ে এনেছে (বাণিজ্য)। কমবেশি বন্ধই করে দিয়েছে বলা যায়। ওরা চেষ্টা করছে। ৩৮ শতাংশ তেল ওরা কিনেছে, ভবিষ্যতে আর কিনবে না।’’

উল্লেখ্য, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক হবে। তা আয়োজন করা হয়েছে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে। সেই কারণেও এই দেশটির প্রতি ট্রাম্পের সুর নরম বলে অনেকে মনে করছেন।

হাঙ্গেরির প্রতি নরম হলেও ভারত নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান ভিন্ন। তিনি শুক্রবার ফের দাবি করেছেন, ভারত রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করে দেবে এবং সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘ভারত আর রাশিয়ার তেল কিনবে না। ওরা অনেকটা কমিয়েও দিয়েছে।’’

বুধবার ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে এবং মোদী তাঁকে জানিয়েছেন, রাশিয়ার তেল আর কিনবে না ভারত। একে ‘বড় পদক্ষেপ’ বলেও ট্রাম্প উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বৃহস্পতিবারই এই দাবি নস্যাৎ করে দেওয়া হয়। তারা জানায়, মোদীর সঙ্গে আদৌ টেলিফোনে ট্রাম্পের কোনও কথা হয়নি।

রাশিয়ার তেল কেনার জন্য ভারতের পণ্যের উপর শাস্তিমূলক ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। তাদের বক্তব্য, ভারত তেল কেনে বলেই সেই টাকায় ইউক্রেনে এত দিন ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। এতে তাদের যুদ্ধে অর্থের জোগান মিলছে। তবে নয়াদিল্লি এ বিষয়ে প্রথম থেকেই অনড়। তারা জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারদর এবং জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে তারা বাণিজ্যনীতি স্থির করে থাকে। রাশিয়ার তেলের ক্ষেত্রেও তা-ই করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.