জাতীয় পরিবহণ আইনের প্রতিবাদে পথে ট্রাক চালকরা, শেষ হচ্ছে তেল, পেট্রোল পাম্পে মানুষের লম্বা লাইন

দেশজুড়ে পেট্রোল পাম্পগুলিতে বিরাট লম্বা লাইন দেখা গেছে আজ সকাল থেকে। জ্বালানির দাম বাড়ার আশঙ্কায় যেমন বড়সড় লাইন পড়ে, পাম্পগুলিতে তেমনটাই লাইন পড়েছে আজও। তবে কারণটা দাম বাড়া নয়, আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পাম্পগুলিতে আর তেল থাকবে কিনা তা নিয়ে। কারণ পাম্প পর্যন্ত জ্বালানি কারা পৌঁছবে? জাতীয় পরিবহণ আইনে সংশোধিত “হিট অ্যান্ড রান” আইনের প্রতিবাদ জানাতে দেশজুড়ে পথে নেমেছে ট্রাক চালকরা। যাদের মধ্যে তেলের ট্যাঙ্কার চালকরাও রয়েছেন।

এর ফলে তেল সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেওয়ার উপক্রম তৈরি হয়েছে। এখনো সব জায়গায় তেল ফুরিয়ে যায়নি, তবে ভারতের প্রায় সব ছোট বড় শহরেই তেল ফুরিয়ে যাওয়ার আতঙ্ক থেকেই জ্বালানি কেনার হিরিক পড়ে গেছে। “হিট এন্ড রান” আইনে আগে যেখানে দু’বছরের জেলের বিধান ছিল তা, বাড়িয়ে দশ বছর করা হয়েছে। এছাড়াও সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। এরই প্রতিবাদে তিন দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ট্রাক চালকরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন পাম্পের জ্বালানি সরবরাহকারী হাজার হাজার ট্যাঙ্কার চালকরাও। সঙ্গে আছেন বাস চালকদের একাংশও। ভারতের বেশ কয়েকটি জায়গায় জ্বালানির সংকট তৈরি হয়েছে। মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি জায়গায় কোনো পাম্পে আর কোনো তেলই নেই বলে জানা যাচ্ছে।

সামনের কয়েকদিন কলকাতা সহ ভারতের অন্যান্য শহরেও এই জ্বালানি সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা পেট্রোল পাম্প ডিলারদের। সংকটের জেরে দেশের বিভিন্ন অংশে পেট্রোল পাম্পগুলিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে লম্বা লাইন দেখা গেছে। পর্যটন ক্ষেত্রগুলিতে ট্রাক ও বাস চালকদের ধর্মঘটে বড় আঘাত হানার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

নয়া আইনের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন ট্যাক্সি চালক ও পরিবহন সংস্থার মালিকরাও। এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে আসা পর্যটকদের বাড়ি ফেরার গাড়ি পেতে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ধর্মঘটের কারণে দারুণ অসুবিধার মুখে পড়েছে নিত্যযাত্রীরা। সেখানে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় ট্রাক দাঁড় করিয়ে পথ অবরোধ চলছে। রাজস্থানেও জায়গায় জায়গায় পথ অবরোধ করেছেন ট্রাক, বাস, ট্যাক্সি চালক ও মালিকরা। পুলিশ বল প্রয়োগ করতে গেলে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

পশ্চিমবঙ্গের ধূলাগড়, ডানকুনি-সহ বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করেছে ট্রাক চালক সহ বিভিন্ন পরিবহন সংগঠনগুলি। কলকাতাতেও অনেক জায়গায় অবরোধ হয়েছে। বন্দর এলাকায় রামনগর মোড়, শিখ লেন, সিজি রোডের মত একাধিক রাস্তায় অবরোধ করছেন বিক্ষুব্ধ ট্রাক চালকরা।

এর ফলে শুধু জ্বালানি পাওয়ার যে সমস্যা হবে তা নয়, এই অবরোধ দীর্ঘ হলে সামনের কয়েকদিনে নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের ঘাটতিও দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ উৎপাদন ক্ষেত্র থেকে বাজারে বাজারে পণ্য পৌঁছে দেন ট্রাক চালকরা। ফলে চড়া মূল্য বৃদ্ধির জন্য জিনিসপত্রের দামও বাড়তে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.