তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাদের লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতিতে অভিযুক্ত দলীয় নেতাদের নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করছে না মোদী সরকার। সোমবার এমনই অভিযোগ করলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং পার্থ ভৌমিক। তাঁরা সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির ছয় নেতার নাম করে অভিযোগ করেন, তাঁদের অস্বাভাবিক ভাবে সম্পত্তি বেড়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থা কোনও পদক্ষেপ করছে না। প্রধানমন্ত্রীর ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’ মন্তব্যকে কটাক্ষ করে সেচমন্ত্রী পার্থ বলেন, ‘‘খেতেই পারো, যদি বিজেপিতে আসো।’’
সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে শশী বলেন, ‘‘সিবিআই এবং ইডি, কেন্দ্রের তদন্তকারী সংস্থা। তাদের ব্যবহার যেমন করা যায়, তেমনই অপব্যবহারও করা যায়। অপব্যবহার করা হচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের ক্ষেত্রে। আর ব্যবহারই করা হচ্ছে না যখন, বিজেপির মধ্যে দুর্নীতি লক্ষ্য করা যায়।’’ শশী আরও বলেন, ‘‘ কেন্দ্রীয় এজেন্সির ব্যবহার হচ্ছে না, এমন ছ’টি নাম বলছি— পেট্রোলিয়ামের ক্ষেত্রে তিনি রাষ্ট্রমন্ত্রী। বিখ্যাত। বিজেপি সাংসদ রামেশ্বর তেলি। রামেশ্বরের সম্পত্তি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তার পর রয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে। তাঁর বিষয়-সম্পত্তি কী ভাবে বেড়েছে!’’
তার পর রাজ্যের মন্ত্রী নাম নিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের। এ ছাড়াও বিজেপি সাংসদ জগদম্বিবা পাল, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার অস্বাভাবিক সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এঁদের কত অর্থ লাভ হয়েছে, দেখা দরকার। কিন্তু সিবিআই, ইডি— কেউ পৌঁছোয় না।’’ সব শেষে তৃণমূলের তরফে আঙুল তোলা হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে। আগেই এই বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি শুভেন্দুর বাবা সাংসদ শিশির অধিকারীর সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়েও আঙুল তোলেন। সোমবার শশী পাঁজা এবং পার্থ ভৌমিক দাবি করলেন, কেন ওই ছ’জনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থা ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
পার্থ বলেন, ‘‘অজিত পওয়ার থেকে শুরু করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী (হিমন্ত বিশ্বশর্মা) কিংবা পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা (শুভেন্দু), বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে দুর্নীতিপরায়ণ মনোবৃত্তির কারণে তাঁদের সমালোচনা করা হলেও, যেই মুহূর্তে তাঁরা বিজেপিতে যোগদান করেন, বিজেপির ওয়াশিং মেশিনের দৌলতে তাঁদের সমস্ত দুর্নীতি ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘কেউ বিজেপিতে যোগ দিলে সে যত দুর্নীতিই করুক না কেন, কেউ তার কেশাগ্র পর্যন্ত ছুঁতে পারবে না। আর তারা (বিজেপি) বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দুর্নীতির অভিযোগ দিয়ে হেনস্থা করছে।’’
অন্য দিকে, শশীর অভিযোগের জবাবে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র বলেন, ‘‘অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারলে শশী পাঁজাকে আমি পুরস্কৃত করব।’’