পঞ্চায়েত সমিতির আসনে মনোনয়ন জমা দিলেন টগরি সাহা। তিনি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার স্ত্রী। তবে কোন দলের প্রতীকে মনোনয়ন জমা দিলেন টগরি, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধন্দ। টগরি নিজে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের মন্তব্যে জল্পনা আরও বেড়েছে। বৃহস্পতিবার টগরি মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবারই বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে আলিপুরে বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত চত্বরে ঘনিষ্ঠদের কাছে স্ত্রীর মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে জীবনকৃষ্ণ জানিয়েছেন, তিনি কিছু জানেন না। তবে স্ত্রী অন্য দল বা নির্দল হিসাবে দাঁড়ালে তা কখনওই তিনি সমর্থন করবেন না বলে জানিয়েছেন জীবনকৃষ্ণ। মনোনয়ন তুলে নিতে বলবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি মনে করেন, তাঁর স্ত্রী স্বাধীন। নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারেন।
তৃণমূলের ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় বড়ঞার বিধায়ক-পত্নীর নাম নেই। টগরির ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি নির্দল প্রার্থী হিসাবে বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা করেছেন। যদিও তৃণমূলের একটি সূত্র বলছে, তাদের প্রতীকেই বড়ঞা ব্লকের শাবলদহ পঞ্চায়েত সমিতির আসন থেকে লড়ছেন টগরি। যদিও জেলা নেতৃত্ব অন্য কথা বলেছেন। বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘টগরি সাহা বলে কেউ তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন এমনটা আমার কাছে খবর নেই। আপনারা যে কেন্দ্রের কথা বলছেন সেখানে দলের অন্য প্রার্থী রয়েছে।’’ টগরিকে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে একাধিক ফোন করা হয়। তবে প্রত্যেক বারই প্রশ্ন শোনার পর কিছু না বলেই ফোনের লাইন কেটে দেন তিনি।
জীবনকৃষ্ণ যদিও আদালত চত্বরে জানিয়েছেন, অন্য দল থেকে তাঁর স্ত্রী দাঁড়ালে তিনি সমর্থন করবেন না। ঘনিষ্ঠদের তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি যে হেতু তৃণমূল দল করি, তাই অন্য কিছু ভাবব না। মনোনয়ন দিয়ে থাকলে তুলে নিতে বলব। এটা ঠিক নয়।’’ পাশাপাশি তিনি এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে কোনও কথা হয়নি টগরির। ‘স্বাধীন মানুষ’ হিসাবে তিনি নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতেই পারেন। কিন্তু তৃণমূলের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে তাঁর সমর্থন নেই বলেই জানিয়েছেন জীবনকৃষ্ণ।
বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ ছিল। দুপুর ১টা নাগাদ জীবনকৃষ্ণের স্ত্রী টগরি বড়ঞা ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়ার টেবিলে হাজির হন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই প্রস্তাবক। সূত্রের খবর, শাবলদহ পঞ্চায়েত সমিতি আসনের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র পূরণ করে জমা দেন। ব্লক অফিস থেকে বেরোতেই তাঁর উদ্দেশে ভেসে আসে ‘চোর চোর’ স্লোগান। অভিযোগ, বিরোধী প্রার্থীরা এই স্লোগান দিয়েছেন। বিরোধী প্রার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘ ক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে মনোনয়নপত্র জমা করতে পারেননি তাঁরা। অথচ ব্লক অফিসের আধিকারিকদের সহায়তায় টগরি দ্রুত মনোনয়ন জমা দেন। তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী দলের প্রার্থীরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।