প্রবল প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছেন এক আদিবাসী মহিলা। তাঁকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু গ্রামের বাইরে বেরনোর একটাই রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বাঁধ অতিক্রম করে যেতে হয়। সেই বাঁধ গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বৃষ্টিতে ডুবে আছে। বাঁধের ওপর দিয়ে প্রবল গতিতে বইছে জলের স্রোত। ওই মুহূর্তের তার ওপর দিয়ে যাওয়া বিপজ্জনক। এমন কোনও উপায় না পেয়ে ওই গর্ভবতী মহিলাকে কাঁধে তুলে নিলেন এক ব্যক্তি। তিনি জানেন বিপজ্জনক রাস্তার কথা, তবুও তিনি ভয় না পেয়ে ওই মহিলাকে কাঁধে নিয়েই পেরিয়ে গেলেন প্রবল জলের স্রোতেও। দায়িত্ব নিয়ে পৌঁছে দিলেন হাসপাতালে। ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশংসার ঝড় উঠেছে ওই ব্যাক্তিকে নিয়ে।
জানা গিয়েছে, ওই ঘটনা অন্ধ্রপ্রদেশের আল্লুরি জেলার একটি ছোট্ট গ্রাম, পিঞ্জারিকন্ডা গ্রামের। ওই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা আদিবাসী সম্প্রদায়ের। গ্রামে স্বাস্থ্যব্যবস্থার পরিকাঠামো ও সুযোগ সুবিধার যে অভাব, তা এই ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। যা দেখার পর প্রবল ক্ষিপ্ত নেটিজেনরা। তাঁরা জানিয়েছে, সরকার মানুষদের এমন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয় যেখানে মানুষকে কর অথবা মরো পরিস্থিতি বেছে নিতে বাধ্য হয়। অসহায় ব্যক্তি জানতেন যে ওই গর্ভবতী মহিলাকে নিয়ে যাওয়ার সময় উপচে পড়া স্রোত অতিক্রম করা কতটা বিপজ্জনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি এও জানতেন যে ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেই হবে। তাই তিনি ওই পরিস্থিতিতেই এগিয়ে যান। এবং মহিলাকে হাসপাতালে দ্রুত ভর্তি করতে সক্ষম হন।
এর আগেও, ২০২২ সালের জুলাই মাসে এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছিল। বন্যা কবলিত ভদ্রদ্রি কোঠাগুডেম জেলার একটি উপজাতীয় গ্রাম থেকে প্রসবকালীন একজন গর্ভবতী মহিলাকে অ্যাম্বুলেন্সে পৌঁছানোর জন্য একটি প্রবল জলের স্রোতের উপর দিয়ে ‘ভেলা’ তে নিয়ে যেতে হয়েছিল। সড়ক যোগাযোগ না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল দুই কিলোমিটার দূরে। আদিলাবাদ জেলায় অনুরূপ একটি ঘটনায়, একজন মহিলাকে প্রসবের জন্য একটি স্রোতের কাছে গরুর গাড়িতে নিয়ে যেতে হয়েছিল। তখন চন্দ্রবাবু নাইডু ওই রাজ্যের আদিবাসীদের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য তৎকালীন শাসক দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টির দিকে আঙুল তুলেছিলেন।