এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল। অবশেষে খুলল সীমান্ত। স্বাভাবিক হল দুই প্রতিবেশী দেশের বাণিজ্য। তালিবানি নির্দেশে আফগানিস্তান-পাকিস্তানের মধ্যবর্তী সীমান্ত ক্রসিং টানা কয়েকদিন বন্ধ থাকার পরে আবার বাণিজ্য শুরু হয়েছে সেখানে। তালিবান ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবারের মতো তোরকহাম সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসা করানোর জন্য আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে যান বহু রোগী ও তাঁদের সঙ্গের লোকজন। এই সব রোগী ও রোগীর পরিজনদের যারা সহায়তা করে, তাদের উপর নতুন নিয়ম চাপানো হয়েছে। হঠাৎ করে চাপিয়ে দেওয়া এই নতুন নিয়মের প্রতিবাদ জানানোর পরেই গত রবিবার আফগান সরকার ওই সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয়। সেই সীমান্ত অবশেষে খোলা হল গতকাল, শনিবার সকালে। যদিও পাকিস্তানের কর্মকর্তারা এই সংক্রান্ত নিয়ম বদলের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পাহাড়ি অঞ্চলের মধ্যে বেশ কয়েকটি সীমান্ত ক্রসিং রয়েছে। নানা কারণে এগুলি প্রায়ই বন্ধ থাকে। এর মধ্যে শনিবার সকাল ছটায় তোরকহাম সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়। আফগান কাস্টমস কর্মকর্তা মুসলিম খাকসার বলেছেন, ওই সীমান্ত ক্রসিং দেশটির পূর্বাঞ্চলের নানগড়হার প্রদেশে অবস্থিত। পাকিস্তানি এক কাস্টমস কর্মকর্তা বলেছেন, নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের জন্য দুপাশ থেকেই সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়েছে। চাল, সিমেন্ট, নির্মাণসামগ্রী, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ট্রাকগুলি আফগানিস্তানের দিকে পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তানের কাস্টমস কর্মকর্তা বলেছেন, পরিচয়পত্র দেখানোর পর আফগানদের রোগী নিয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র পরীক্ষার পর হুইলচেয়ারে থাকা অনেক রোগীকেই এদিন সীমান্ত ক্রসিং পার হতে দেখা গিয়েছে।
আফগানিস্তানের কুন্দুজ শহরের এক বাসিন্দা বলেন, অসুস্থ মায়ের সঙ্গে তিনি ওই সীমান্তে পাঁচ-ছ’ দিন ধরে আটকে। তাঁর মায়ের মতো কয়েক হাজার রোগী আছেন। তাঁরা পাকিস্তানে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলেন, এই সীমান্ত সব সময় খুলে রাখা উচিত। এই পথ রোগীদের উপকারে আসে, বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও কাজে আসে।
২০০১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এসেছিল তালিবান। তার পরে আবার ২০২১ সালে। এখন ইসলামাবাদের অভিযোগ, তালিবান সরকার আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে জঙ্গিদের উত্থান ঘটাচ্ছে। আর এই জঙ্গিরা পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। যদিও কাবুল এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।