শিশুখাদ্যে আলাদা করে চিনি মেশানোর অভিযোগ উঠেছে সুইস বহুজাতিক নেসলের বিরুদ্ধে। ভারতে ছ’মাস বা তার বেশি বয়সিদের জন্য সেরেল্যাক ব্র্যান্ডের যে পণ্য বিক্রি করে সংস্থা, তাতে প্রতি বারের খাবারে (এক বারে যতটুকু খাওয়ানো হয়) ২.৭ গ্রাম চিনি পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছে একটি আন্তর্জাতিক রিপোর্ট। যা শিশুদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক হওয়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। এই প্রেক্ষিতে তৎপর হল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার সূত্রের দাবি ছিল, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের অধীন খাদ্য সুরক্ষা নিয়ন্ত্রক (এফএসএসএআই)। এ বার তাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলল ক্রেতা সুরক্ষা নিয়ন্ত্রক সিসিপিএ। শুক্রবার ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রক বলেছে, সেরেল্যাকের উপাদানগুলি এফএসএসএআই-কে পরীক্ষা করে দেখতে বলেছে তারা। তার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগের অভিঘাতে শুক্রবারও দেশের বাজারে পড়েছে নেসলে ইন্ডিয়ার শেয়ার দর।
এ দিন ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রকের সচিব এবং সিসিপিএ-র প্রধান নিধি খারে বলেন, ‘‘এফএসএসএআই-কে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলে চিঠি পাঠিয়েছি।’’ তাতে লেখা হয়েছে, সুইৎজ়ারল্যান্ড ভিত্তিক তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী নেসলে ভারতে তাদের শিশুখাদ্য সেরেল্যাকে চিনি মেশায়। অথচ জার্মানি, ফ্রান্স, সুইৎজ়ারল্যান্ড, ব্রিটেনের মতো দেশে তা করে না। খাবারে চিনির মাত্রা বেশি থাকা শিশুদের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার জন্য ক্ষতিকারক। ফলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। খারে বলেছেন, ‘‘আমাদের নাগরিকদের, বিশেষত সদ্যজাত এবং শিশুদের স্বাস্থ্য এবং ভাল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুরক্ষার মান থেকে একচুলও সরলে সেটা শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে।’’ তাঁর দাবি, এই জন্যই সেরেল্যাকের উপাদান খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপের আর্জি জানানো হয়েছে নিয়ন্ত্রককে। তারা তদন্ত করে সত্যিটা সামনে আনবে। এর আগে শিশু অধিকার রক্ষার জাতীয় কমিশন এনসিপিসিআর-ও তদন্তের বার্তা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল এফএসএসএআইয়ের উদ্দেশে।
নেসলে অবশ্য আগেই সাফাই দিয়ে বলেছে, তারা ভারতের সমস্ত নিয়ম কড়া ভাবে মেনে পণ্য তৈরি করে। স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার সঙ্গে আপস করে না। যদিও পণ্যে চিনি থাকার বিষয়টি কার্যত স্বীকার করেই তাদের দাবি, এর মাত্রা কমাতে নিরন্তর চেষ্টা করে। চালায় গবেষণা। গত পাঁচ বছরে ভারতে বিক্রি করা বিভিন্ন শিশুখাদ্যে ৩০% পর্যন্ত চিনি কমানো হয়েছে।