রাজভবনের তিন কর্মীকে ডাকল পুলিশ, মহিলাকে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রবিতেই হাজিরার নির্দেশ

রাজভবনের তিন কর্মীকে তলব করেছে কলকাতা পুলিশ। রবিবারই তাঁদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনা সেই মহিলাকে আটকানোর অভিযোগ রয়েছে এই কর্মীদের বিরুদ্ধে। নতুন করে তাঁদের নামে এফআইআরও করেছে পুলিশ। তার পরেই এই তলব।

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজভবনের ঘটনা নিয়ে অভিযোগকারিণী আদালতে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঁচ ঘণ্টা গোপন জবানবন্দি দেন। তাঁর অভিযোগ, যে দিন তাঁর সঙ্গে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে, সে দিন রাজভবন থেকে বেরোতে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের এফআইআরে নাম রয়েছে এসএস রাজপুত, কুসম ছেত্রী এবং সন্ত লালের। তিন জনেই রাজভবনে কর্মরত। তাঁদের রবিবার সকালে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অভিযোগকারিণী। তিনিও রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী। কিন্তু যে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল ভারতীয় সংবিধানের রক্ষাকবচ পান। সংবিধান অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি তদন্ত করা যায় না। তাই মহিলার ওই অভিযোগের তদন্ত শুরু করতে পারেনি পুলিশ। যদিও যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। রাজভবনের সে দিনের সিসিটিভি ফুটেজও হাতে পেয়েছে পুলিশ। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মহিলার অভিযোগ, রাজভবনের কনফারেন্স রুমে রাজ্যপালের সঙ্গে তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। মহিলা সেখান থেকে বেরিয়ে প্রথমে পুলিশের আউটপোস্টে যান। পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের আউটপোস্টে যাওয়ার সময়ে রাজভবনে তাঁকে কয়েক জন কর্মী বাধা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর কী করণীয়, তা জানতে সংবিধান এবং আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছে লালবাজার। সূত্রের খবর, সেখান থেকে জানা গিয়েছে, রাজভবনের কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্তে কোনও বাধা নেই। তার পরেই তিন কর্মীর নামে নতুন এফআইআর করা হয়।

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজ্যপাল বোস। একে তিনি ‘ভোটের বাজারে রাজনৈতিক ফয়দা তোলার চেষ্টা’ বলে অভিহিত করেন। পাশাপাশি, এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর রাজভবনে পুলিশের প্রবেশও নিষিদ্ধ করে দেন তিনি। রাজভবনের সকল কর্মচারীকে জানিয়ে দেন, পুলিশ বা অন্য কারও কাছে এই সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে কোনও কথা বলা যাবে না। পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করতেও নিষেধ করেন তিনি। সেই অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত রাজভবনের কোনও কর্মী পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেননি বলে খবর। রবিবার পুলিশের ডাকে ওই তিন কর্মী হাজিরা দেন কি না, তা অবশ্য সময়ই বলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.