ইউক্রেন যুদ্ধের আবহেই মস্কোয় গিয়ে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করলেন এস জয়শঙ্কর। মঙ্গলবারের ওই বৈঠকের পরে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই যুগটা যুদ্ধের নয়।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আজকের বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির বিষয়ে পারস্পরিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে মূল্যায়ন ও মত বিনিময় হয়েছে।’’
অতিমারি পরবর্তী পর্যায়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে ধাক্কা এসেছে তাতে বিশ্ব জুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে জানিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘যু্দ্ধ নয়, ভারত সব সময়ই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের পক্ষপাতী।’’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর এপ্রিলে নয়াদিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন লাভরভ। সেই প্রসঙ্গ তুলে বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিভিন্ন স্তরে দু’দেশের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’’ এ প্রসঙ্গে, সেপ্টেম্বরে উজবেকিস্তানের সমরকন্দে ‘সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন’ (এসসিও) সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে পুতিনের আলোচনা এবং দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা স্তরের বৈঠকের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন তিনি। প্রসঙ্গত, জয়শঙ্করের আগেই মস্কো সফরে গিয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।
ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া মস্কোর উপর নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও নয়াদিল্লি সেই স্রোতে শামিল হয়নি। কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক স্তরে দুই পুরনো বন্ধু দেশের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া সংক্রান্ত ভোটাভুটিতে ধারাবাহিক ভাবে ভারত ভোটদানে বিরত থেকে ভারসাম্যের অবস্থান নিয়ে চলেছে। হিংসা অবিলম্বে বন্ধ করে আলোচনা এবং কূটনীতির রাস্তায় ফেরার ডাক দিয়ে গিয়েছে সাউথ ব্লক। এমনকি, পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে মোদী বলেছেন, ‘‘এখন যুদ্ধের সময় নয়।’’
এই পরিস্থিতিতে সোমবার দু’দিনের রাশিয়া সফরে মস্কো গিয়েছেন জয়শঙ্কর। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ব জুড়ে জ্বালানি সঙ্কটের আবহে কত সস্তায় অশোধিত তেল রাশিয়া থেকে ভারত আমদানি করতে পারে, তার উপর অনেকাংশে নির্ভর করছে জয়শঙ্করের দৌত্যের সাফল্য। প্রসঙ্গত, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পরে অবশ্য বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন জায়গায় জয়শঙ্কর এবং লাভরভ এই নিয়ে পাঁচ বার বৈঠক করলেন।