মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রেই ছিল ফাঁদ! ফাঁস হতেই কী ভাবে এক ঘণ্টায় ‘দোষী’দের ধরল পর্ষদ?

এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে শোরগোল পড়তেই এক ঘণ্টার মধ্যেই ‘দোষী’দের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে মালদহের দুই পরীক্ষার্থীর। পর্ষদ সূত্রে খবর, প্রশ্নপত্রে থাকা ‘ইউনিক কিউআর কোডের’ স্ক্যান করেই ‘দোষী’দের চিহ্নিত করা গিয়েছে।

মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রুখতে আগের বছরগুলিতে একাধিক পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছিল পর্ষদকে। এ বারে আরও এক ধাপ এগিয়ে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ধাঁচে সিরিয়াল নম্বরের ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার করা হবে ‘ইউনিক কিউআর কোড’-এর মাধ্যমে। এই কোড সাধারণত যে কোনও মোবাইল বা ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট ব্যবহার করে স্ক্যান করা যাবে না। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ওই তথ্য জানা যাবে বলে জানা গিয়েছিল।

পর্ষদ সূত্রে খবর, এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ন’লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া। তাদের প্রত্যেকের প্রশ্নপত্রেই আলাদা আলাদা কোড রয়েছে। কোনও কোডের সঙ্গে কোনও কোডের মিল নেই। তার ফলে কোন পরীক্ষার্থী কোন প্রশ্নপত্র পেয়েছে, তা পর্ষদ অফিসে বসে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। শুক্রবার সমাজমাধ্যমে যে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়েছিল, তাতেও সেই কিউআর কোড ছিল। তা স্ক্যান করে পর্ষদের কর্মীরা জানতে পেরেছিলেন কোন জায়গার কোন পরীক্ষার্থীর হাতে ওই প্রশ্নপত্র পড়েছিল। কারণ, ওই কোডে যে সিরিয়াল নম্বরটি ‘এনক্রিপটেড’ রয়েছে, সেই কোড দেখেই বোঝা যায়, প্রশ্নপত্রটি কোন জেলায় গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কোন স্কুলে ওই প্রশ্নপত্র গিয়েছিল, তা-ও জানা যায় সিরিয়াল নম্বর থেকে। তার পর স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, কোন পরীক্ষার্থীর হাতে সেই প্রশ্নপত্র পড়েছিল।

শুক্রবার মাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই দেখা যায়, বাংলার একটি প্রশ্নপত্র সমাজমাধ্যমে ঘুরছে। এর পরেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে পর্ষদ। পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাজমাধ্যমে বেরিয়ে যাওয়ার যে ঘটনা ঘটে, এক ঘণ্টার মধ্যেই তাতে দোষীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। একে পর্ষদ নিজেদের সাফল্য হিসাবেই দেখছে। রামানুজ বলেন, ‘‘মালদহের দুই পরীক্ষার্থী এই কাজ করেছে। ইতিমধ্যেই তাঁদের শনাক্ত করা গিয়েছে। তাঁদের পরীক্ষা সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে গিয়েছে। মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশনই বাতিল করে দিয়েছে পর্ষদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.