করোনার নতুন উপরূপকে নিয়ে চিন্তার কারণ নেই, সুস্থ থাকার উপায় বলছেন শহরের চিকিৎসকরা

আবার জনজীবনে ফিরে এসেছে কোভিড আতঙ্ক। কোভিডের নতুন উপরূপ বিএফ.৭ ইতিমধ্যেই চিনে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সে দেশের প্রশাসনের তরফে সুস্পষ্ট করে কিছু জানানো না হলেও, ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন সে দেশে। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিলের মতো দেশগুলিতেও। ভারতেও ৪ জনের শরীরে বিএফ.৭ প্রতিরূপের উপস্থিতি টের পাওয়া গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রাজ্যের বাসিন্দারাও। কোভিডের পুরনো দিনগুলি আবার ফিরতে চলেছে বলে অনেকেরই আশঙ্কা। যদিও কলকাতায় বিভিন্ন চিকিৎসকরা বলছেন, আশঙ্কা অমূলক। তবে কোভিডের ছোঁয়াচ থেকে বাঁচতে সকলকেই কিছু নিয়মাবলি মেনে চলতে হবে।

চিকিৎসক যোগীরাজ রায় যেমন সকলকে আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, জ্বর, সর্দির মতো উপসর্গ থাকলেই কেউ কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন, এটা বলা যায় না। মরসুমি সর্দিকাশি অনেকেরই হয়ে থাকে। তবে সর্দিকাশি হলে সাবধানে থাকাই ভাল বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ক্ষেত্রে তাঁর পরামর্শ, সর্দিকাশি, হালকা জ্বর থাকলে মাস্ক পরে বেরোনোই ভাল। সে ক্ষেত্রে কোভিড আক্রান্ত কারও মৃদু উপসর্গ থাকলেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে না। তিনি অবশ্য বলেছেন, “৩ দিন পরেও কারও জ্বর না ছাড়লে, তাঁর অবশ্যই কোভিড পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।” শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থাকলেও দ্রুত পরীক্ষা করানোর উপর জোর দিয়েছেন তিনি।

চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক কোভিডের বুস্টার ডোজ় নেওয়ার উপর জোর দিতে বলেছেন। তাঁর কথায়, “কোভিডের প্রকোপ কমে যাওয়ায় অনেকেই কোভিডের বুস্টার ডোজ় নেননি। তাই চিনের মতো স্বাস্থ্য বিপর্যয় হওয়া রুখতে আগেই সাবধান থাকা ভাল।” একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, খুব খারাপ কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে সাবধান থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।

কোভিড মোকাবিলায় শুক্রবারই ভারত বায়োটেকের নাকে নেওয়ার টিকাকে (ন্যাজ়াল ভ্যাকসিন) ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রতিষেধককে যুক্ত করা হয়েছে ‘কোউইন অ্যাপে’। চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরির মতে, ন্যাজ়াল ভ্যাকসিন যাতে সমস্ত ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করা উচিত। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে লাইন দিয়ে অনেকেরই টিকা নিতে আপত্তি রয়েছে। তা ছাড়া ন্যাজ়াল ভ্যাকসিনে সুচ ফোটানোর কোনও ব্যাপার নেই। আশা করছি অনেকেই এই টিকাটি নিতে রাজি হবেন।” তবে সবাই যাতে চিকিৎসাকর্মীদের সাহায্য ছাড়া নিজেই প্রতিষেধক নিতে পারেন, তার জন্য সমস্ত ওষুধের দোকানে, যথা সম্ভব কম দামে এই ন্যাজ়াল ভ্যাকসিনগুলি রাখার ব্যবস্থা করা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.