যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলে মনে হবে হামাসের কাছে ইজ়রায়েলি শক্তি আত্মসমর্পণ করছে। এমনটাই জানালেন দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। যুদ্ধ যেমন চলছে, তেমনই চালিয়ে যাওয়ার নীতি নিয়েছেন তিনি। ফলে পশ্চিম এশিয়ায় মৃত্যুমিছিল আরও দীর্ঘ হতে চলেছে।
গাজ়া ভূখণ্ডে ঢুকে স্থলপথে আক্রমণ শুরু করে দিয়েছে ইজ়রায়েলি ফৌজ। প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে চলছে হামলা। একই সঙ্গে আকাশপথেও হামলা চালাচ্ছে ইজ়রায়েল। গাজ়ার মাটিতে মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে। যুদ্ধ মঙ্গলবার ২৪ তম দিনে পা দিল। ইতিমধ্যে শুধু গাজ়ায় মারা গিয়েছেন আট হাজারের বেশি মানুষ। তাঁদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশু।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিতে হামলা চালায়। হামাসের হামলায় নিহত ইজ়রায়েলির সংখ্যা প্রায় ১৪০০। বহু মানুষকে ইজ়রায়েল থেকে পণবন্দি করে নিয়ে যায় হামাস। তার পরেই এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন নেতানিয়াহু। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার পণ করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জে একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। তাতে ভোটাভুটি থেকে বিরত থেকেছে ভারত। হামাসের সদস্যদের হত্যা করতে গিয়ে নিরপরাধ সাধারণ প্যালেস্তিনীয় নাগরিকদের প্রাণ যাতে না যায়, সে বিষয়ে নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছে আমেরিকা। যুদ্ধে তারা ইজ়রায়েলের পাশেই আছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি জানান, গাজ়ায় হামাসের বিরুদ্ধে ইজ়রায়েলের অভিযানে ইতিবাচক অগ্রগতি হচ্ছে। এই অবস্থায় যুদ্ধ থামানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। নেতানিয়াহুর কথায়, ‘‘যুদ্ধবিরতি মানেই হামাসের সামনে ইজ়রায়েলের আত্মসমর্পণ, সন্ত্রাসবাদের কাছে ইজ়রায়েলের আত্মসমর্পণ। সেটা কখনওই হতে পারে না।’’ জয় না পাওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে ইজ়রায়েল।
হামাস পরিচালিত গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, ৭ অক্টোবর থেকে সোমবার পর্যন্ত গাজ়ায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৮,৩০০-র বেশি। ইজ়রায়েল জানিয়েছে, ২৩০ জন ইজ়রায়েলি পণবন্দি বর্তমানে হামাসের হাতে রয়েছে। তাঁদের নিরাপদে মুক্ত করা ইজ়রায়েলি ফৌজের প্রাথমিক লক্ষ্য। এ ছাড়া, হামাসকে গাজ়া থেকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্য নিয়েও এগোচ্ছেন নেতানিয়াহু।
আমেরিকার সমর্থন পেলেও ইজ়রায়েলকে লড়তে হচ্ছে আরও কয়েকটি শক্তির বিরুদ্ধে। লেবানন থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা হামাসকে সহায়তা করছে। সিরিয়া, ইরানও যুদ্ধে হামাসের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যত দিন যাচ্ছে, জটিল হয়ে উঠছে পশ্চিম এশিয়ার ভূ-রাজনীতি।